দেশের মানুষের জুলাই সনদ ‘প্রয়োজন নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য মনে করেন, দেশের মানুষের একটা ‘সুষ্ঠু নির্বাচন’ প্রয়োজন। আর জুলাই সনদ প্রয়োজন উপদেষ্টাদের মতো কিছু মানুষের, যারা আগামীতে এ দেশে থাকতে গিয়ে নানা প্রশ্নের মুখে পড়বেন। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে’ কথা বলতে গিয়ে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন তিনি।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম’ এ সমাবেশের আয়োজন করে। হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমি একজন ক্ষুদ্র রাজনৈতিক নেতা হিসেবে, কর্মী হিসেবে মনে করি, জুলাই সনদ দেশের জনগণের প্রয়োজন নাই। জুলাই সনদ হয়তো কিছু কিছু ব্যক্তির, যারা এখানে উপদেষ্টা হয়েছেন, যারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বসবাস করতে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়বেন, তাদের জন্য হয়তো এই জুলাই সনদের প্রয়োজন আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন, যেখানে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবেন। আমরা আশা করব, আগামীতে একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হবে। এই নির্বাচনে যারা বিজয়ী হয়ে জনগণের প্রতিনিধি হবেন, তারাই জুলাই সনদকে সমর্থন করবেন। আমার দল বিএনপি জুলাই সনদকে সমর্থন করেছে, আমরাও একে সমর্থন করতে বাধ্য। কিন্তু এমন এমন জিনিস ঢুকাবেন না, যেটা নিয়ে আগে আলোচনা হয় নাই।’
হাফিজের অভিযোগ, ঐকমত্য কমিশনে যেসব বিষয়ে আলোচনা হয় নাই, সেই সব জিনিসও চূড়ান্ত খসড়ায় দেওয়া হয়েছে। হাফিজ বলেন, ‘এ ধরনের সনদ আমাদের প্রয়োজন নাই। আমাদের প্রয়োজন একটা সংসদ, যে সংসদ আগামী দিনের ভাগ্য নির্ধারণ করবে, যে সংসদ গণতন্ত্রকে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত করতে সাহায্য করবে। বিদেশ থেকে আমদানি করা কয়েকজন তথাকথিত প-িত ব্যক্তির প-িতির মাধ্যমে যে সনদ আমরা দেখতে পারছি, সেই সনদের প্রয়োজন আমাদের নাই।’
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এই যে জুলাই অভ্যুত্থান, তার আগে এরশাদবিরোধী অভ্যুত্থান, তার আগে ইয়াহিয়া খানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানÑ এরকম কয়েকটি রাজনৈতিক অভ্যুত্থান হয়েছে, যার ফলে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু এগুলোর সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধের কোনো তুলনা চলে না। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ একটা নতুন দেশ সৃষ্টি করেছে, জন্ম দিয়েছে। সেটা কারা দিয়েছে? এই আপনারা, মুক্তিযোদ্ধারা নতুন দেশ সৃষ্টি করেছেন। আগামী দিনে মুক্তিযুদ্ধকে কেউ যেন ছোট করার চেষ্টা না করে। যদি মুক্তিযুদ্ধকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, আমরা এখনো জীবিত আছি; ইনশাল্লাহ আমরা তা প্রতিরোধ করব।’
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বক্তব্য দেন।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন