রবিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসিবুল ইসলাম,বরিশাল

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৫, ০১:৪৪ এএম

ফেসবুক ও টিকটকে অশ্লীল ভিডিও কনটেন্টের জোয়ার অস্বস্তিতে বরিশালের নাগরিক সমাজ

হাসিবুল ইসলাম,বরিশাল

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৫, ০১:৪৪ এএম

ফেসবুক ও টিকটকে অশ্লীল ভিডিও কনটেন্টের জোয়ার অস্বস্তিতে বরিশালের নাগরিক সমাজ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বা টিকটকে বরিশালে অশ্লীল ভিডিও কনটেন্ট ছড়িয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি করেছেন শহরের কতিপয় তরুণ-তরুণী। বরিশাল শহরের বেলস পার্ক, মুক্তিযোদ্ধা পার্কসহ বিভিন্ন স্থানে নিজেদের ভিডিও ধারণ করে পরে সেগুলোতে উসকানি বা বিদ্বেষমূলক ভয়েস জুড়ে দিয়ে সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করে ভার্চুয়াল জনপ্রিয়তা অর্জনের পাশাপাশি অর্থ আয় করতে গিয়ে নিজেদের নি¤œ রুচির পরিচয় দিচ্ছেন। এতে কীর্তনখোলা তীরের জনপদ বরিশাল শহর সম্পর্কে বাংলা ভাষাভাষি মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরির শঙ্কা হয়েছে। বিষয়টি বরিশালের নাগরিক সমাজের জন্য অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, বরিশালে পাঁচ থেকে সাতটি গ্রুপ রয়েছে, যারা সমাজমাধ্যমে অশ্লীলতা সংবলিত ভিডিও কনটেন্ট ছড়িয়ে সর্বদা আলোচনায় থাকেন। এ ছাড়া তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে সংবাদপত্রের সাই বোর্ড ব্যবহার করে গোটা শহর দাপিয়ে বেড়ানোর অভিযোগ রয়েছে।
এদের মধ্যে একজন মহিবুল, যিনি নিজেকে ‘বরিশাল সিটি কিং’ হিসেবে ফেসবুক ও টিকটকে জাহির করেন। শহরের বান্দ রোডের বাসিন্দা কথিত এই সিটি কিংকে কখনো বেলস পার্ক, কখনো মুক্তিযোদ্ধা পার্কসহ বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে একাধিক তরুণীর সঙ্গে নেচে-গেয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি দিয়ে ভিডিও ধারণ করতে দেখা যায়। পরে সেই সব ভিডিওর সঙ্গে বিদ্বেষ বা দম্ভোক্তিমূলক ভয়েস সংযুক্ত করে ফেসবুক ও টিকটকে পোস্ট করেন তিনি। 
সিটি কিংয়ের মতো অশ্লীলতা ছড়িয়ে আলোচিত ঝালকাঠির মাহিয়া মাহিও। বিশোর্ধ্ব তরুণী গত ২৯ আগস্ট শহরের পোর্ট রোড এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে জিহাদ নামে এক যুবকসহ পুলিশের হাতে আটক হন। পুলিশ দুজনকে বিয়ে করার শর্তে ওই সময় তাদের মুক্তি দেয়। তার পরও মাহি প্রতিনিয়ত সমাজমাধ্যমে অশ্লীলতা ছড়িয়ে আলোচনায় রয়েছেন। 
পুলিশ জানিয়েছে, মাহি গ্রুপের আরও আট তরুণ-তরুণীকে কিছুদিন আগে শহরের জিয়া সড়ক এলাকার একটি আবাসিক বাসা থেকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহণ করে কোতয়ালি মডেল থানার পুলিশ। মাহিয়া মাহি ও সিটি কিং মহিবুলের মতো একই কাজ করছেন রুবেল, বৃষ্টি, ইতু, মানিকসহ সাত-আটটি গ্রুপ। 
সাংবাদিক ও গবেষক আনিসুর রহমান স্বপন এ বিষয়ে রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোখ রাখা বিরক্তিকর হয়ে গেছে। অশ্লীল ভিডিও কনটেন্ট ‘প্রাচ্যের ভেনিস’ বরিশাল সম্পর্কে বাংলা ভাষাভাষিদের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। এ নিয়ে অনেকের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। গুটি কয়েক ছেলেমেয়ের এই অশ্লীলতা বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ জরুরি।’ 
অনুরূপ মন্তব্য করেন সামাজিক সংগঠক ও সাংবাদিক কাজী মিরাজ মাহমুদ এবং কাজী আল মামুন। তাদের ভাষায়, ‘ফেসবুক ও টিকটক এখন অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু ছেলেমেয়ে সস্তা জনপ্রিয়তা ও অর্থ আয়ের ধান্ধা করতে গিয়ে কবি জীবননান্দের শহরের বদনাম করছেন। এ নিয়ে তুমুল বিতর্ক থাকলেও তাদের থামানো সম্ভব হচ্ছে না, বরং তাদের মধ্যে অনেকে অখ্যাত পত্রিকার সাইনবোর্ড লাগিয়ে নানা অপরাধমূলক কর্মকা-েও জড়িয়ে পড়ছেন।’ এসব কর্মকা- বন্ধে পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে তারা মন্তব্য করেন। 
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এসআই পদমর্যাদার একাধিক কর্মকর্তা এ বিষয়ে রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, রুচিহীন ভিডিও তৈরি করে অর্থ আয় এবং জনপ্রিয়তা অর্জনের খায়েসে এরা বরিশালের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এসব কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িতদের কেউ কেউ ঘটনাচক্রে পুলিশের হাতে আটকও হচ্ছেন। কিন্তু তাদের বেশি দিন আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না, আইনি ফাঁক গলে জামিনে বেরিয়ে সেই একই কাজে লিপ্ত হচ্ছেন।
‘এসব কর্মকা- অশ্লীল হলেও আইনে আটকানো যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন’ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম। এই পুলিশ কর্মকর্তা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘কখনো কখনো সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ তরুণ-তরুণীদের আটক করছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নিচ্ছে। পাশাপাশি তাদের পরিবার-পরিজনকে থানায় ডেকে নিয়ে সৎ পরামর্শ দেওয়া হয়, সেখানে তারা এ ধরনের কর্মকা- না করারও প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে, যা আসলেই হতাশাজনক।’
উঠতি বয়সি তরুণ-তরুণীদের এসব কর্মকা- যদি আইন দিয়ে আটকানো না যায়, তাহলে সরকারকে ভিন্ন কোনো পন্থা খুঁজতে হবে এবং তাতে সাংবাদিক, রাজনৈতিক এবং সমাজকর্মীদের অংশগ্রহণ থাকা জরুরি বলে মত প্রকাশ করেছে স্থানীয় অভিজ্ঞ মহল।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!