শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২৫, ০২:৪৮ এএম

বারবার ফিরে আসেন তিনি

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২৫, ০২:৪৮ এএম

বারবার ফিরে আসেন তিনি

ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃষ্টিপাগল বাঙালিকে মাতিয়ে রেখেছিলেন তিনি। তা সে চলচ্চিত্র হোক বা নাটক হোক অথবা কবিতায়। তার কণ্ঠের জাদুতে কখন যেন কবিতার চরিত্রগুলো জীবন্ত হয়ে আমাদের চারপাশে ধরা দিত বারবার। মনকে আচ্ছন্ন রাখার সেই ম্যাজিকের নামই তো সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

স্বাধীনতা-উত্তর রক্ষণশীল বঙ্গ সমাজকে কখনো টুইস্ট নাচে, কখনো উদয়ন প-িতের দড়ি ধরে টান মেরে দুর্নীতির ভিত নাড়িয়ে দেওয়ার হুংকারে। কখনো তার শাণিত মগজাস্ত্রে, কখনো রবীন্দ্র, সুকুমার বা জীবনানন্দকে নিজ কণ্ঠে ধারণ করে। সেই তিনিই আবার কখনো রাজা লিয়ার হয়ে মঞ্চের আলো আঁধারিতে অভিনয়ের সেরা হিরোর তকমা পেয়ে যান। তাই তো সাংস্কৃতিক অভিধান মানেই চিরহরিৎ সৌমিত্র। বাংলা ভাষা, বাংলা সিনেমা, বাংলা কবিতা, বাংলার রঙ্গমঞ্চে, বাঙালির রোজনামচায় তার প্রয়াণের পরেও হোমাপাখির মতোই আজও যেন বারবার ফিরে আসেন তিনি।

বাংলা ভাষার চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অন্যতম কিংবদন্তি ও সর্বজনপ্রিয় অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ২০২০ সালের আজকের তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে। আজ তার চলে যাওয়ার পাঁচ বছর। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলায়। তাকে নিয়ে লিখতে গেলে কম পড়ে যায় পাতা, ফুরিয়ে আসে কালি। তার বিশালতা, তার বিস্তৃতি এত গভীর; যা পূর্ণাঙ্গভাবে অনুধাবন করা কিংবা ফুটিয়ে তোলা প্রায় অসম্ভব। অভিনয়, আবৃত্তি, সাহিত্য তথা শিল্প ভুবনে তিনি এমন উচ্চতায় নিজেকে নিয়ে গেছেন যে, তাকে মাথানত করে কুর্ণিশ করে সবাই।

এই নন্দিত অভিনেতার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আগামীকাল কলকাতার রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সৌমিত্র-সন্ধ্যা ‘তিন ভুবনের পারে সৌমিত্র’। গানে, গল্পে, আবৃত্তি, নাটক এবং স্মৃতিচারণায় পাওয়া যাবে সেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে। যিনি না ফেরার দেশে চলে গেলেও বারবার ফিরে আসেন বাংলার সেই ধানসিঁড়ি নদীটির তীরে। এদিন অবশ্য আরও পাওয়া যাবে সৌমিত্রর অচেনা ও অজানা দিক।

এ ছাড়াও এই মঞ্চে ঘোষিত হবে একটি বিশেষ ‘সৌমিত্র সম্মান’। ‘সংস্কৃতির বিভিন্ন ধারায় যারা প্রতিনিয়ত বাংলা ও বাঙালিকে সমৃদ্ধ করে চলেছেন যারা, সীমিত সাধ্যের মধ্যেই তাদেরকেই শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানো হবে।

ছেলেবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অসামান্য আগ্রহ ছিল। ছাত্র অবস্থায় তিনি বিখ্যাত অভিনেতা ও নির্মাতা অহিন্দ্র চৌধুরীর কাছে অভিনয় শিখেছেন। কলেজের ফাইনাল ইয়ারে তিনি শিশির ভাদুরির অভিনয় দেখে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হন। এরপরই একজন অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন বুনতে থাকেন সৌমিত্র।

১৯৫৯ সালে সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘অপুর সংসার’ সিনেমাতে অভিনয় করেন। সত্যজিতের ৩৪টি সিনেমার ১৪টিতে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সিনেমা ছাড়াও নাটক ও যাত্রায় অভিনয় করেছেন তিনি।

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে আছে ‘অশনিসংকেত’, ‘সোনার কেল্লা’, ‘দেবদাস’, ‘নৌকাডুবি’, ‘গণদেবতা’, ‘হীরক রাজার দেশে’, ‘আতঙ্ক’, ‘গণশত্রু’, ‘সাত পাকে বাঁধা’, ‘ক্ষুধিত পাষাণ’, ‘তিন কন্যা’, ‘পারমিতার একদিন’, ‘আগুন’, ‘শাস্তি’, ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’, ‘অলীক সুখ’, ‘নোবেল চোর’, ‘আবার অরণ্যে’, ‘বেলাশেষে’, ‘প্রাক্তন’ ইত্যাদি।

তিনি ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ ২০০৪ সালে রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মভূষণ সম্মানিত হন। ২০১২ সালে ভারতের চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘দাদা সাহেব ফালকে’ পুরস্কার অর্জন করেন। এ ছাড়া, ২০১৮ সালে ফ্রান্সের ‘লেজিয়ঁ দ্য নর’ পুরস্কার পান। বাঙালির আবেগের আর এক নাম সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। গুণী এই অভিনেতার জন্য আজও বাঙালির মন ভারাক্রান্ত করে দিনটা।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!