মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ০৪:৩২ এএম

মোহাম্মদপুরে নিজ বাসায় মা-মেয়ে খুন

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ০৪:৩২ এএম

মোহাম্মদপুরে নিজ  বাসায় মা-মেয়ে খুন

  • শরীরে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন
  • পুলিশের সন্দেহে গৃহকর্মী আয়েশা
  • চারদিন আগে কাজ নেয় মেয়েটি

‎‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নিজ বাসায় খুন হয়েছেন মা-মেয়ে। নিহতরা হলেন- মা লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা নাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)। খবর পেয়ে গতকাল সোমবার শাহজাহান রোডে রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিপরীত পাশের আবাসিক ভবনের সপ্তমতলায় একটি ফ্ল্যাট থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ হত্যাকা-ে পুলিশ সন্দেহের তির গৃহকর্মী আয়েশার (২০) দিকে। মেয়েটি মাত্র চারদিন আগে অস্থায়ী গৃহকর্মী হিসেবে ওই বাসায় কাজ নিয়েছিল। আয়েশা সোমবার সকালে কাজে এসেছিল বোরকা পরে, দেড় ঘণ্টা বাদে বেরিয়ে যায় স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে।

পুলিশ জানায়, মা-মেয়েকে হত্যার পর বাথরুমে গোসল করে গৃহকর্মী আয়েশা। এরপর নাফিসার স্কুল ড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। জানা গেছে, নিহত নাফিসা মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। নাফিসার বাবা এ জেড আজিজুল ইসলাম পলাশ উত্তরার সানবিমস স্কুলের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক। স্ত্রী ও একমাত্র কন্যাকে নিয়ে ওই বাসায় প্রায় ১৩ বছর ধরে বসবাস করে আসছিলেন তিনি। তাদের গ্রামের বাড়ি নাটোরে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো গতকাল সকাল ৭টার দিকে স্কুলের উদ্দেশে বাসা থেকে বেরিয়ে যান আজিজুল। স্কুলে পরীক্ষা চলমান থাকায় বাসায় ফেরেন তাড়াতাড়ি। বেলা ১১টার দিকে বাসায় এসেই তিনি স্ত্রী-কন্যার লাশ দেখতে পান। পরে তার চিৎকারে আশপাশের বাসিন্দারা বেরিয়ে আসেন, খবর দেওয়া হয় পুলিশে।

পারিবারিক সূত্র জানা গেছে, আজিজুল বাসায় এসে প্রথমে দরজায় নক করে কোনো সাড়াশব্দ পাননি, এরপর দেখতে পান দরজা খোলা। তিনি প্রবেশ করে ড্রইংরুমে মেয়ে নাফিসার রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন এবং পাশের রুমে একটু দূরে স্ত্রীর রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। বেঁচে থাকতে পারে ধারণা করে অন্যান্য প্রতিবেশীর সহায়তায় মেয়েকে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন আজিজুল, সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আর পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে লায়লা আফরোজের লাশ উদ্ধার করে। লাশ দুটির সুরতহালের পর ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে। দুজনের শরীরেরই একাধিক স্থানে এলোমেলো ছুরিকাঘাতের চিহ্ন থাকার কথা বলেছে পুলিশ।

আজিজুল ইসলাম বলেন, আমাদের একজন কাজের মহিলার দরকার ছিল। সাধারণত গেটে অনেকেই কাজের সন্ধানে আসেন। আমরা দারোয়ানকে এমন কেউ এলে জানানোর কথা বলে রেখেছিলাম। গত ৪ দিন আগে একটি মেয়ে কাজের সন্ধানে আসে। বোরকা পরিহিত অবস্থায় ওই মেয়েটি এলে দারোয়ান তাকে আমাদের বাসায় পাঠিয়ে দেয়। এরপর আমার স্ত্রী মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে কাজে রেখে দেয়। পরে আমি স্ত্রীর মুখে শুনেছি, মেয়েটার নাম আয়েশা। আয়েশা তাদের জানিয়েছে, তার গ্রামের বাড়ি রংপুর, জেনেভা ক্যাম্পে চাচা-চাচির সঙ্গে থাকে। বাবা-মা আগুনে পুড়ে মারা গেছে, তার শরীরেও আগুনে পোড়ার ক্ষত রয়েছে বলে জানিয়েছিল। স্থায়ী গৃহকর্মী না হওয়ায় তার কোনো কাগজপত্র রাখা হয়নি বলে জানান আজিজুল। তিনি জানান, কাজ শুরুর পর প্রথম দুদিন সময় মতোই এসেছে, রোববার এসেছিল সাড়ে ৯টার দিকে।

ওই ভবনের একাধিক সিসিটিভি ভিডিও বিশ্লেষণ করে পুলিশ বলছে, সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বোরকা পরে ওই বাসায় ঢোকে আনুমানিক ২০ বছর বয়সি আয়েশা। আর ৯টা ৩৬ মিনিটে স্কুলড্রেস পরে নির্বিঘেœ বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। ওই স্কুলড্রেসটি ছিল খুন হওয়া নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসার। ওই বাসা থেকে পুলিশ দুটি ধারালো ছুরি উদ্ধার করেছে। হত্যাকারী ঘটনার পর বাসার বাথরুম ব্যবহার করেছে, এমন আলামত পাওয়ার কথাও বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল সরেজমিনে ওই বাসাটিতে গিয়ে দেখা যায়, লিফটের সামনে থেকে বাসার দরজা পর্যন্ত ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। দরজা খুলতেই বাসায় আসবাবপত্র এলোমেলো অবস্থায় দেখা গেছে। বাসার ভেতরের অবস্থার বিষয়ে পুলিশ বলছে, বাসায় ধস্তাধস্তির আলামত রয়েছে, মেঝেতে ও দেওয়ালে রক্তের দাগ রয়েছে। আলমারি ও ভ্যানিটি ব্যাগ তছনছ অবস্থায় রয়েছে। এ থেকে তাদের ধারণা, বাসা থেকে কিছু খোয়া যেতে পারে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান বলেন, এখন পর্যন্ত প্রাথমিক তদন্তে হত্যাকা-ে সন্দেহভাজন হিসেবে ওই গৃহকর্মীরই জড়িত থাকার বিষয়টি ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুটি ধারালো ছুরি উদ্ধার করেছে এবং হত্যাকারী ফ্রেশ হয়েছে বাথরুমে এমন আলামতও পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, ঘটনার আগে-পরে ওই বাসায় একজনের আসা-যাওয়াই দেখা গেছে। সিসি ক্যামেরা ফুটেজে আমরা একজনই দেখেছি, পরবর্তীতে তদন্তে দেখা যাবে আশপাশে আরও কেউ ছিল কি না। আমরা প্রাথমিকভাবে কিছু তথ্য পেয়েছি, সেসব যাচাই-বাছাই চলছে। এছাড়া কোনো মালামাল খোয়া গেছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে রাতে এ খবর লেখা পর্যন্ত ওই গৃহকর্মীকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী খালেককে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!