ভারতে জুনিয়র হকি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ অভিষেকেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে বাংলাদেশের যুবারা। গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচ খেলে জয় না পেলেও শক্তিশালী সব প্রতিপক্ষের সম্মান আদায় করে নিতে পেরেছে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৫-৩ গোলে হার দিয়ে গ্রুপ পর্বের মিশন শুরু করে তারা। এরপর এশিয়ান হকির অন্যতম সেরা দল দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ৩-৩ গোলে ড্র করে বাংলাদেশের ছেলেরা। গ্রুপের শেষ ম্যাচে ফ্রান্সের বিপক্ষে তুমুল লড়াই জমিয়ে হেরেছে তারা। ম্যাচটিতে ৩-২ গোলে জয় পায় ফ্রান্স। এই তিন ম্যাচে দারুণ পারফরম্যান্স উপহার দেওয়ার পর বিশ^কাপের মূল লড়াই থেকে ছিটকে পড়া বাংলাদেশ স্থান নির্ধারণী ম্যাচে চমক দিয়েছে। তারা ১৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে ওমানকে।
এরপর শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়াকে ৫-৩ গোলে হারিয়ে বিস্ময় উপহার দেন আমিরুলরা। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আশাজাগানিয়া পারফরম্যান্সের পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন আমিরুল। টুর্নামেন্টে নিজেকে আলাদা করে চেনালেন এই তরুণ খেলোয়াড়। গ্রুপ পর্ব ও স্থান নির্ধারণী মিলিয়ে চারটি হ্যাটট্রিক উপহার দেন এই ডিফেন্ডার। পাঁচ ম্যাচে করেন ১৫ গোল। তার স্টিকের কারুকাজে, নিখুঁত ড্র্যাগ অ্যান্ড ফ্লিকে নজর কেড়েছেন সবার। ২০ বছর বয়সি এই খেলোয়াড় জানালেন, প্রথমবার বিশ^কাপে খেলায় বাংলাদেশ অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে পড়েছিল। তা না হলে গ্রুপ পর্ব টপকানো বাংলাদেশের জন্য কোনো কঠিন কাজ ছিল না।
পেনাল্টি কর্নার স্পেশালিস্ট আমিরুল। বাংলাদেশের একসময়ের পিসি স্পেশালিস্ট মামুনুর রহমান চয়ন, আশরাফুল ইসলামের কাছ থেকেই অনুপ্রেরণা পান এই খেলোয়াড়। জাতীয় দলে খেলা প্রসঙ্গে আমিরুল বলেন, ‘২০২২ সালে জাতীয় দলে সুযোগ পাই; এশিয়ান গেমস দিয়ে। জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার মুহূর্তটি ছিল অসাধারণ। গর্বের। এত দিন যে জার্সি গায়ে জড়ানোর জন্য পরিশ্রম করেছি, সেটা পাওয়ার আনন্দ আসলে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। এখন সিনিয়র টিমের বিশ্বকাপে ভালো করতে চাই।’
বিশ্বকাপে নিজেদের সেরাটা উপহার দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই খেলতে যায় বাংলাদেশ। আমিরুল বলেন, ‘এই বিশ্বকাপে যখন সুযোগ পেলাম, তখন শুধু ভেবেছি, আমরা স্রেফ অংশ নেওয়ার জন্য খেলব না। এমনভাবে খেলব, সবাই যেন আমাদের সম্মান করে। সেটা আমরা কিছুটা হলেও আদায় করতে পেরেছি, যেটা ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে আনন্দের, গর্বের।’ নিজে স্টিক হাতে ঝলক দেখিয়ে তৃপ্ত হলেও দলের অর্জনে আক্ষেপ ঝরেছে আমিরুলের কণ্ঠে, ‘পুল পর্বে আমরা কোরিয়ার বিপক্ষে ড্র করেছি, ওমান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে (স্থান নির্ধারণী ম্যাচে) হারিয়েছি, এটাও প্রাপ্তি। তবু শেষ ষোলো দলের মধ্যে থাকতে না পারার আক্ষেপটুকু থেকে যাবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন