ঢাকা রবিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৫

বিশ্বমানের শিক্ষা ও ক্যারিয়ারের দেশ

মিনহাজুর রহমান নয়ন
প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৫, ০২:৩৯ এএম

যুক্তরাজ্য দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য স্বপ্নের গন্তব্য হিসেবে পরিচিত। উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, আধুনিক গবেষণা সুবিধা, বৈচিত্র্যময় আন্তর্জাতিক পরিবেশ এবং বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কারণে শিক্ষার্থীরা এখানে আসতে আগ্রহী। বিশ্বের শীর্ষ ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চারটি যুক্তরাজ্যে অবস্থিত অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ, ইম্পেরিয়াল কলেজ অব লন্ডন এবং আরও অনেক শিক্ষার্থীর ইচ্ছা থাকে লন্ডনে পড়াশোনা করার, বিশেষ করে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের। গ্লোবাল অ্যাডমিশন ডেস্কের সিইও নুর নবী সৈকত জানাচ্ছেন, যুক্তরাজ্য শুধু শিক্ষার জন্য নয়, বরং ক্যারিয়ার ও স্থায়ী বসবাসের সম্ভাবনাময় দেশ।

যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার সুবিধা
বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ডিগ্রি, পড়াশোনার মেয়াদ তুলনামূলকভাবে কম, বৃহৎ স্কলারশিপের সুযোগ, স্নাতকোত্তর শেষে ২ বছরের গ্র্যাজুয়েট রুট ভিসা, পরিবার নিয়ে যাওয়ার সুযোগ এবং কাজের সুযোগ, বাস্তবমুখী এবং মানসম্পন্ন কোর্স।  

জনপ্রিয় বিষয়সমূহ
বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, আইন, কম্পিউটার সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং, পাবলিক হেলথ, মিডিয়া, আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন, এডুকেশন, সাইবার সিকিউরিটি, ডেটা অ্যানালিটিক্স, ফাইন্যান্স এবং হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট।

আবেদন প্রক্রিয়া
শিক্ষার্থীরা চাইলে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আবেদন করতে পারেন অথবা অনুমোদিত শিক্ষা পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ও সনদ, পাসপোর্ট কপি, স্টেটমেন্ট অব পারপাস, রেফারেন্স লেটার, ইংরেজি দক্ষতার প্রমাণ (ওঊখঞঝ রেজাল্ট)। 

স্কলারশিপের সুযোগ
যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতি বছর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বৃহৎ স্কলারশিপ ঘোষণা করে থাকে। যেমন: কমনওয়েলথ স্কলারশিপ, চেভারিং স্কলারশিপ, গ্রেট স্কলারশিপ।  বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরাসরি স্কলারশিপ (যেমন: ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথ, দক্ষিণ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়, স্কটল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চল বিশ্ববিদ্যালয়)
ভালো একাডেমিক ফল ও শক্তিশালী আবেদন থাকলে ২৫% থেকে ১০০% পর্যন্ত টিউশন ফি মওকুফ পাওয়া সম্ভব।

খরচ ও জীবনযাত্রা
টিউশন ফি সাধারনত বছরে ১১,০০০ থেকে ২০,০০০ পাউন্ড (প্রায় ১৫ থেকে ২৫ লাখ টাকা) থাকার খরচ: মাসে ৭০০ থেকে ১,০০০ পাউন্ড (বাসস্থান, খাবার ও যাতায়াতসহ), পার্টটাইম কাজ: সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা, প্রতি মাসে ৮০০ থেকে ১,২০০ পাউন্ড পর্যন্ত আয় সম্ভব। 

পরিবার নিয়ে যাওয়া
মাস্টার্স বা পিএইচডি লেভেলের শিক্ষার্থীরা স্বামী/স্ত্রী ও সন্তানদের ডিপেন্ডেন্ট ভিসায় নিয়ে যেতে পারেন। স্ত্রী পূর্ণকালীন চাকরি করার অনুমতি পান। সন্তানরা সরকারি স্কুলে বিনামূল্যে ভর্তি হতে পারে। 

পড়াশোনা শেষে সুযোগ
পড়াশোনা শেষে শিক্ষার্থীরা গ্র্যাজুয়েট রুট ভিসার মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে ২ বছর পর্যন্ত চাকরি খুঁজতে পারেন। চাকরি পেলে এটি স্কিলেড ওয়ার্কার ভিসাতে  তে রূপান্তর সম্ভব, টানা কয়েক বছর কাজ করলে স্থায়ী বসবাসের (পিআর) জন্য আবেদন করা যায়।

আইইএলটিএস ও ভাষাগত যোগ্যতা
সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হতে আইইএলটিএস ৬.০ থেকে ৬.৫ স্কোর প্রয়োজন, তবে যাদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনার প্রমাণ আছে, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই আইইএলটিএস ওয়েভার দেওয়া হয়। 

ভিসা প্রক্রিয়া
যুক্তরাজ্যের ভিসা আবেদন সম্পূর্ণ অনলাইন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঈঅঝ খবঃঃবৎ (ঈড়হভরৎসধঃরড়হ ড়ভ অপপবঢ়ঃধহপব ভড়ৎ ঝঃঁফরবং) পাওয়ার পর টকঠও ঝঃঁফবহঃ ঠরংধ (ঞরবৎ ৪) এর জন্য আবেদন করতে হবে, ব্যাংক স্টেটমেন্টে বছরের টিউশন ফি + ৯ মাসের লিভিং খরচ প্রদর্শন করতে হবে। 

স্টাডি গ্যাপ
যুক্তরাজ্যে সাধারণত ৩ থেকে ৮ বছরের স্টাডি গ্যাপ গ্রহণযোগ্য, যদি আবেদনকারীর পেশাগত অভিজ্ঞতা বা যৌক্তিক ব্যাখ্যা থাকে।

পরামর্শ
যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করতে চাইলে: প্রথমে নিজের লক্ষ্য অনুযায়ী সঠিক কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করুন, স্কলারশিপ, ভিসা ও প্রোফাইল মূল্যায়নের জন্য অভিজ্ঞ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নিলে প্রক্রিয়াটি সহজ ও সফল হয়।