করের সুবিধা ও যথাযথ নীতি সহযোগিতা পেলে দেশে তৈরি ওষুধের কাঁচামাল রপ্তানি করে ২ বিলিয়ন ডলার অর্জন করা যাবে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এই অর্থ অর্জন করা সম্ভব। পাশাপাশি এ ধরনের কাঁচামাল তৈরি করে আমদানিনির্ভরতা কমানো যাবে। ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। গতকাল শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ‘বাংলাদেশের এপিআই খাত এগিয়ে নিয়ে আসা: অন্তর্বর্তী সরকারের সমর্থন ও স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য একটি টাস্কফোর্সের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এমন সম্ভাবনার চিত্র উঠে আসে।
বাংলাদেশ এপিআই অ্যান্ড ইন্টারমেডিয়ারিজ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএআইএমএ) বাইমা এই আলোচনার আয়োজন করে। বাইমার সভাপতি সাইফুর রহমান, কার্যানির্বাহী সদস্য এ বি এম জামাল উদ্দিন, সদস্য শেখ নিজাম উদ্দিন এতে উপস্থিত ছিলেন। নীতিমালা যথাযথভাবে প্রতিপালন, আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা করা, করসুবিধা প্রদান করাসহ এপিআই খাতের নানান সমস্যা সমাধানে একটি টাস্কফোর্স তৈরির দাবি জানায় সংগঠনটি। সাইফুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালে ১৮ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হয়েছে। তবে কোভিড ও নানা জটিলতায় রপ্তানি কমেছে। ভারত যদি ৩০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করতে পারে, আমরাও সহজে ২ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করতে পারব। পাঁচ বছর আমাদের নিরবচ্ছিন্ন সহায়তা দিতে হবে। সেই সহযোগিতা এনবিআর থেকে পাওয়া যেতে পারে। এক্সপোর্ট করলে আমরা ভ্যাট, ট্যাক্স রিফান্ড পাই, সেটা দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা লো কস্ট রিফাইন্যান্স পলিসি চাচ্ছি সরকারের কাছে, যা পোশাক খাতে দেওয়া হয়েছে। এটা যদি সরকার আমাদের দেয়, তাহলে আমরা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারব।
সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১৬ সাল থেকে সরকার এপিআইয়ের গুরুত্ব বুঝতে পারে। তবে এই সরকারের আমল থেকে আমরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া শুরু করেছি। এপিআই নিয়ে বিভিন্ন কাজ হচ্ছে। এই সেক্টরের জন্য আমরা একটা টাস্কফোর্স বা অ্যাডভাইজরি কমিটি চাই, যেখানে অংশীদারেরা সবাই বসে এই খাতের সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারি। স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে যেসব পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো সময়মতো যেন আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি।
বাইমার কার্যনির্বাহী সদস্য ও গণস্বাস্থ্য ফার্মার এমডি এ বি এম জামালউদ্দিন বলেন, বছরে আমরা দেড় থেকে দুই বিলিয়ন ডলারের এপিআই পণ্য আমদানি করি। এর ৫০ শতাংশ দেশেই উৎপাদন করা সম্ভব হবে আমাদের যদি সরকার সহযোগিতা করে। এটা হলে আমাদের কর্মসংস্থান বাড়বে। বাইমার আরেক সদস্য শেখ নিজাম উদ্দিন বলেন, আমরা যদি এই খাতকে বড় করতে পারি, তাহলে অনেক কর্মসংস্থান হবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেক গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছেন, তাদের এখানে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি এ সময় বলেন, এই খাতের সম্ভাবনা ব্যাপক। নীতিসহায়তা পেলে এই খাতে আমদানিনির্ভরতা কমবে।
আপনার মতামত লিখুন :