বাইরে বইছে হিমেল হাওয়া, ঘরের ভেতরও ঠান্ডা ভাব, এ সময়টাতে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়া খুবই সাধারণ ব্যাপার। বিশেষ করে যাদের ত্বক এমনিতেই একটু রুক্ষ, তাদের সমস্যা শীতে আরও বেড়ে যায়। নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরও যদি ত্বক ফেটে যায়, তাহলে সেটি কোনো অন্তর্নিহিত সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
কেন ত্বক শুষ্ক হয়
বেশিরভাগ শীতের প্রভাবে ঠান্ডা বাতাস ও কম আর্দ্রতার কারণে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। অনেকের বয়স ৪০-এর পর তেল ও ঘাম গ্রন্থির কার্যক্ষমতা কমে যায়, তখন ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। যারা কৃষি কাজ, বাগান বা নির্মাণ কাজে যুক্ত, তাদের ত্বক বেশি রুক্ষ হয়। গরম পানি, ক্ষারযুক্ত সাবান, ক্লোরিনযুক্ত পানিতে গোসল বা সাঁতার, ধূমপান, অ্যালকোহল, অতিরিক্ত ক্যাফেইন ও বিমানে ভ্রমণ করলেও ত্বক রুক্ষ হয়। যাদেরপুষ্টির ঘাটতি যেমন ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’, জিংক ও ফ্যাটি অ্যাসিডের অভাব তাদেরও ত্বক রুক্ষ হতে পারে। এ ছাড়া যাদের থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, কিছু ওষুধ, চর্মরোগ (সোরিয়াসিস, একজিমা), এসিতে অতিরিক্ত সময় থাকা তাদের ত্বক রুক্ষ হয়।
প্রতিকার কীভাবে করবেন
ত্বক শুষ্ক হওয়ার মূল কারণটি চিহ্নিত করতে হবে। ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। তবে তার আগে ত্বকের মরা কোষ পরিষ্কার করে নিতে হবে। ময়েশ্চারাইজারযুক্ত সাবান ব্যবহার করতে হবে। প্রচুর পানি পান করুন এবং সুতির পোশাক পরুন।
হাত ও পায়ের যত্ন
হাতের তালু নরম রাখতে ১০% ইউরিয়া ক্রিম বা ভ্যাসলিন ব্যবহার করুন। পায়ের তলা ফাটলে ৫% স্যালিসাইলিক অ্যাসিড অয়েন্টমেন্ট বা ভ্যাসলিন নিয়মিত মাখতে পারেন।
মুখের যত্ন
ময়েশ্চারাইজারযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করুন। যাদের ব্রণ আছে, তারা ক্রিমে সামান্য পানি মিশিয়ে নিতে পারেন। শীতকালেও বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন সূর্যের রশ্মি শীতেও ত্বকের ক্ষতি করে।
ঠোঁটের যত্ন
ঠোঁট বারবার জিভ দিয়ে ভেজানো একেবারেই নয়। কুসুম গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে ঠোঁট পরিষ্কার করে ভ্যাসলিন বা গ্লিসারিন লাগান। ভালো লিপবাম সঙ্গে রাখুন এবং দিনে তিন-চারবার লাগান।
প্রাকৃতিক উপায়ে
ত্বকের যত্ন
গোসলের আগে সারা শরীরে অলিভ ওয়েল মাখুন। স্ক্রাব বানান: ১ টেবিল চামচ অলিভ ওয়েল + ৫ টেবিল চামচ লবণ + ১ টেবিল চামচ লেবুর রস এটি ত্বকের মরা কোষ দূর করবে। নারিকেল তেল বা অ্যালোভেরা জেল-মধুর মিশ্রণ ব্যবহার করুন। প্রচুর শাক-সবজি ও পানি খান।
বিশেষ সতর্কতা
যাদের সোরিয়াসিস, একজিমা, বা ইকথায়োসিস-এর মতো পুরোনো চর্মরোগ আছে, তাদের শীতে সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই তাদের ত্বক পরিচর্যায় থাকতে হবে আরও সচেতন, প্রয়োজনে আগেভাগেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন