ঢাকা রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫

মির্জা ফখরুল বললেন

দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি তত জটিল হচ্ছে

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২৫, ১২:৫৩ এএম

অযথা বিলম্ব না করে অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মনে হচ্ছে দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাচ্ছে। যারা গণতন্ত্র ও শোষণহীন সমাজে বিশ্বাস করে না, তারা ফের জোট পাকাচ্ছে। 

গতকাল শনিবার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে এক আলোচনায় সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে এই মঞ্চ গঠন করেছে। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারকে আহ্বান করব, অযথা বিলম্ব না করে সমস্যা চিহ্নিত করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলুন। এরপর সমস্যা শেষ করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যান। সেটিই বোধহয় একমাত্র পথ।
তিনি আরও বলেন, একাত্তর ও স্বাধীনতা হচ্ছে আমাদের মূল কথা। সেখানে আমাদের কোনো আপস নেই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়ও আমাদের কোনো আপস নেই। আলোচনা, সহনশীলতা ও অন্যের মতকে মেনে নেওয়াÑ সবকিছু মিলিয়ে আমরা এমন একটি জায়গায় পৌঁছাতে পারব, যেখান থেকে আমরা নতুন করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পৌঁছাতে পারি।

৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে নতুন করে গণতান্ত্রিকব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ পেয়েছি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, কিন্তু মনে হচ্ছে, দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাচ্ছে। যারা গণতন্ত্রে, জনগণের অগ্রযাত্রায় ও একটি শোষণহীন সমাজব্যবস্থা গড়ে ওঠার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, তারা আবার জোট পাকাচ্ছে। যে ফ্যাসিস্ট শক্তিকে তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলাম, তারা ভেতরে ভেতরে আবার সংগঠিত হচ্ছে এবং ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার চক্রান্ত করে যাচ্ছে।

দেশে মবতন্ত্র, হত্যা, ছিনতাই ও গুম ভয়াবহভাবে বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ করে এ সময় উদ্বেগ প্রকাশ করেন ফখরুল। তিনি বলেন, যে সুযোগ আমাদের সামনে এসেছে, এটা যদি হারিয়ে ফেলি, তাহলে বাংলাদেশ আরও পিছিয়ে যাবে। প্রতিবার জনগণ ও আমাদের ছেলেরা প্রাণ দেবে, একটা সুযোগ তৈরি হবে, আর নিজেদের দায়িত্বহীনতার কারণে সেই সুযোগ হারাবÑ সেটা হতে পারে না। তাই দেরি না করে সংস্কার, জুলাই সনদ ও নির্বাচন এই তিনটি বিষয় সামনে রেখে যত দ্রুত এগিয়ে যাওয়া যায়, দেশের জন্য ততই মঙ্গল হবে বলে উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব।

ফখরুল বলেন, আমরা আশাবাদী, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদের সেই লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে সক্ষম হবেন। বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, নির্বাচনের মধ্যদিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন করতে চাই। অতীতে যেমন সব বাধা উপেক্ষা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছি, আগামী দিনগুলোতেও কোনো বাধা আমাদের ঠেকাতে পারবে না।

আলোচনা সভায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) সভাপতি নুরুল হক নুর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।