ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে ৪১ শতাংশের বেশি মানুষ বিএনপিকে ভোট দিতে চান। আর জামায়াতের ঝুলিতে পড়তে পারে ৩০ শতাংশের কিছু বেশি। আগামী নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থী দেখে ভোট দিতে চান ৬৫ শতাংশ মানুষ। গতকাল বুধবার জরিপের এমন তথ্য প্রকাশ করেছে ইনোভেশন কনসাল্টিং। তারা জানায়, আগামীতে সরকার গঠনের জন্য বিএনপিকেই বেশি যোগ্য মনে করছে মানুষ। আর নারীদের মধ্যেও জনপ্রিয়তা বেশি বিএনপির। প্রায় সাড়ে ১০ হাজার মানুষের ওপর চালানো হয় এই জরিপ।
গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় আর্কাইভস ভবন মিলনায়তনে জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশের সব জেলায় ১০ হাজার ৪১৩ জনের ওপর জরিপ চালায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনোভেশন কনসাল্টিং।
সংস্থাটি জানায়, ‘জনগণের নির্বাচন ভাবনা’ নিয়ে দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় পর্বের জরিপের ফল এটি। এতে অংশ নেন ১০ হাজার ৪১৩ জন। তাদের মধ্যে ৬৯ দশমিক ৫ শতাংশ শহরের এবং ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ গ্রামের ভোটার। ৬৪ জেলায় ৫২১টি প্রাইমারি স্যাম্পলিং ইউনিটে জরিপটি চালিত হয়।
জরিপের তথ্যে দেখা যায়, মোট ৪১ দশমিক ৩০ শতাংশ মানুষ বিএনপিকে ভোট দেওয়ার পক্ষে। জামায়াতের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৩০ দশমিক ৩০ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ১১ শতাংশ কম। ২০০৮ সালের ভোটের হিসাব বিবেচনায় জামায়াতে ইসলামীর ভোট বাড়ছে সাড়ে সাত গুণেরও বেশি। আগামীতে সরকার গঠনের জন্য যোগ্যতম দল হিসেবে বিএনপিকে বিবেচনা করছে ৩৯ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ। এ বিষয়ে জামায়াতের পক্ষে ২৮ দশমিক ১ শতাংশ আর এনসিপিকে যোগ্য মনে করছেন ৪ দশমিক ৯ শতাংশ।
যদি আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে বিএনপির ভোট বেড়ে হতে পারে ৪৫ দশমিক ৫ শতাংশ আর জামায়াতের ভোট বেড়ে হবে ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে ভোটে থাকলে আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে চান ১৮ শতাংশের বেশি মানুষ। জরিপের তথ্য বলছে, ষাটোর্র্ধ্বরা বিএনপিকে বেশি ভোট দিতে চান, এই সংখ্যা ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ, জামায়াতের ক্ষেত্রে ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ। আর যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৮-এর মধ্যে, তাদের মধ্যে জামায়াতের জনপ্রিয়তা বেশি।
জরিপ অনুযায়ী কম শিক্ষাগত যোগ্যতার মানুষের মধ্যে বিএনপির জনপ্রিয়তা বেশি আর উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে জামায়াত এগিয়ে আছে। লিঙ্গভিত্তিক তথ্যে দেখা যায়, নারী ভোটের সর্বোচ্চ অংশ রয়েছে বিএনপির পক্ষে, যা ৩৬ দশমিক ২ শতাংশ। জামায়াতের ক্ষেত্রে এই হার ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ।
জরিপে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ মনে করেন, দলটিকে সুযোগ দেওয়া উচিত। তবে ৪৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বলেছেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার আগে বিচার হওয়া দরকার।
সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন ইনোভেশন কনসাল্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবাইয়াত সরওয়ার। পরে ফলাফলের ওপর আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ এম শাহান, ভয়েস ফর রিফর্মের সহসমন্বয়ক ফাহিম মাশরুর প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন