ঢাকা রবিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৫

বললেন এনসিপি নেতা তুষার

জুলাই সনদ স্বাক্ষরের নামে ‘মহাপ্রতারণা’ হয়েছে

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৫, ০১:২৯ এএম

জুলাই সনদ স্বাক্ষরের নামে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘মহাপ্রতারণা’ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। তিনি বলেন, ‘বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিশ্চিত করার আগেই জুলাই সনদ স্বাক্ষরের নামে মহাপ্রতারণা অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায়, সেখানে জাতীয় নাগরিক পার্টি অংশ নেয় নাই। কারণ আমরা বলেছি, জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, সেই পদ্ধতি যতক্ষণ পর্যন্ত আপনারা না বলবেন, (ততক্ষণ) আমরা কিন্তু জুলাই সনদে স্বাক্ষর করতে পারি না।’ গত শুক্রবার রাতে ফরিদপুরের অম্বিকা মেমোরিয়াল হলরুমে এনসিপির ফরিদপুর অঞ্চলের সমন্বয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তুষার বলেন, ‘শাপলা কলি দেওয়ার মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে, এনসিপি বাচ্চাদের দল। গত ১৭ বছর রাজনীতি ও গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা ছিল না। এই বাচ্চাদের তীব্র আন্দোলনের দ্বারা স্বৈরাচারের পতন হয়েছে।’ নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে তুষার বলেন, ‘অনেক জল ঘোলা করেছেন। একবার দিব না বলে ফেলছেন, এই ইগোর জায়গা থেকে বেরিয়ে আসুন। আপনারা শাপলা কলি দিতে চেয়েছেন, তা দ্রুতই শাপলা হয়ে ফুটবে। ফরিদপুরে শাপলা হবে নৌকার বিকল্প। নৌকা ডুবে যাবে, শাপলা পানিতে ফুটে উঠবে।’ নির্বাচন কমিশন ‘বিশেষ দল দ্বারা প্রভাবিত’ দাবি করে তাদের দিয়ে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হবে কি না তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন এই এনসিপি নেতা।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তুষার বলেন, ‘একটি বড় রাজনৈতিক দল জুলাই সনদ নিয়ে না ভোটের ক্যাম্পিং করছে। তাদের ৩০ শতাংশ ভোট না ভোটের পক্ষে গেলেও বাকি বিপুল ভোটে জুলাই সনদ পাস হবে। তখন তারা আয়নায় মুখ দেখাতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরা অতীত থেকে কিছুই শিক্ষা নেয়নি। তাদের নেতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে হ্যাঁ এবং না ভোটের আয়োজন করেছিলেন। অথচ এই বিএনপি হ্যাঁ-না ভোটের বিরোধিতা করছে। বিএনপিকে বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে না দাঁড়িয়ে হ্যাঁ ভোটের পক্ষে ক্যাম্পিং করার আহ্বান জানান এনসিপির এই নেতা।’
এদিকে, গতকাল শনিবার একই দিনে বরগুনা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, নির্বাচন কমিশনে ব্যক্তিসর্বস্ব স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত আমরা দেখেছি। আমরা শুরু থেকে বলেছি, এই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো নীতিমালা নেই। তারা কোন নীতিমালার আন্ডারে শাপলা কলি প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করেছে? কোন নীতিমালার কারণে তারা শাপলাকে অন্তর্ভুক্ত করবে না? এটা কি তারা স্পষ্ট করেছে? করেনি। অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে কোন নীতিমালার কারণে তাদের প্রতীক দিয়েছে, সেটা কি স্পষ্ট করেছে? সেটাও করেনি। তার মানে এ নির্বাচন কমিশনের মার্কা সংযুক্তিকরণ বা না করণের যে বিষয়টি...মধ্যযুগীয়ভাবে এ বিষয়গুলো ডিল করছে নির্বাচন কমিশন।’ 
এনসিপির এ নেতা বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, নির্বাচন কমিশনে অনেকগুলো পক্ষের শক্তি জড়িত।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা বিএনপিপন্থি কমিশনার আছেন, তাঁরা বিএনপির পারপাস সার্ভ করেন, যাঁরা জামায়াতপন্থি আছেন, তাঁরা জামায়াতের পারপাস সার্ভ করেন। আর যাঁরা আর্মিপন্থি নির্বাচন কমিশনার আছেন, তাঁরা আর্মিদের পারপাস সার্ভ করেন। এই কমিশনে আবার অসংখ্য আওয়ামী লীগপন্থি চাকরিজীবী রয়েছেন। তাঁদের বিষয়ে কি নির্বাচন কমিশনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে? নেয়নি।’
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘আমরা এনসিপিÑআমাদের অবস্থান পরিবর্তন করিনি। নির্বাচন কমিশন তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে স্বেচ্ছাচারীভাবে। সংস্কার নিয়ে আর আমাদের মার্কা নিয়ে আমরা সব সময় একটা অবস্থানে ছিলাম।’