ঢাকা শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫

ইনিংস ও ৪৭ রানে হারল আয়ারল্যান্ড

দাপুটে জয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

মাঠে ময়দানে প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২৫, ১২:৩৪ এএম

সফরকারী আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অনুমিতভাবেই সিলেট টেস্টে ব্যাটে-বলে দাপট দেখিয়ে জিতল বাংলাদেশ। গতকাল প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের কাছে ইনিংস ও ৪৭ রানে হেরেছে আয়ারল্যান্ড। এই জয়ে দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল টাইগাররা। আগামী ১৯ নভেম্বর থেকে ঢাকার মিরপুরের শেরে-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ম্যাচটি শুরু হবে।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগের দিনই জয়ের সব আয়োজন সেরে রেখেছিল বাংলাদেশ। ৮৫ রানে আয়ারল্যান্ডের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে আউট করেন স্বাগতিকেরা। তাতেই জয়ের সুবাস পায় তারা। অবশ্য চতুর্থ দিনে কিছুটা লড়াই করেছে আয়ারল্যান্ড। কিন্তু ইনিংস হার এড়াতে পারেনি সফরকারীরা। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৪ রানে অলআউট হয়েছে আইরিশরা। প্রথম ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ছিল ২৮৬ রান। আর বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ৫৮৭ রান করে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা দেয়। ম্যাচ-সেরা হয়েছেন ১৭১ রানের ইনিংস খেলা মাহমুদুল হাসান জয়।

চতুর্থ দিন বাংলাদেশের জয়ের অপেক্ষা বাড়িয়ে দেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রথম সেশনে ফিফটি তুলে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এই ব্যাটসম্যান। তবে লাঞ্চের পরপরই পেসার নাহিদ রানার বলে আউট হন ম্যাকব্রাইন। তার খাটো লেন্থের বলে পুল করতে গিয়ে টাইমিং গড়বড় হয়। শর্ট মিডউইকেটে হাসান মুরাদের হাতে ক্যাচ দেন আইরিশ ব্যাটসম্যান। সাজঘরে ফেরার আগে ম্যাকব্রাইনের নামের পাশে ছিল ৫টি চারে ৫২ রান। এরপর অবশ্য আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে পাল্টা আক্রমণ করেন জর্ডান নিল ও ব্যারি ম্যাককার্থি। প্রায় বলে ব্যাটে রান করে গড়েন ৫৪ রানের জুটি। ৫৬ বলের এই জুটি ভাঙেন হাসান মুরাদ। ছক্কার চেষ্টায় লং অফে সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ দেন নিল। যদিও ক্যাচ ধরতে গিয়ে প্রথমে হাত থেকে ফসকে গিয়েছিল সাদমানের। তবে দ্বিতীয় দফায় ধরতে কোনো সমস্যা হয়নি তার। ৩৬ রান করেন নিল। শেষ সাফল্যটি আসে রিভিউ নিয়ে। তাইজুলের বলে ম্যাককার্থি খেলতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় কিপার লিটন দাসের হাতে। আম্পায়ার আউট দেননি। আলট্রা এজে দেখা যায়, বল ব্যাটের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় স্পষ্ট একটি স্পাইক। ম্যাককার্থির ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান। এর আগে সকালে আগের দিনের ৫ উইকেটে ৮৬ রানে ব্যাটিং শুরু করে আয়ারল্যান্ড। ম্যাথিউ হামফ্রিজকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাকব্রাইন যোগ করেন ৩১ রান। যদিও ৮ রানে থাকতেই তিনি ফিরতে পারতেন, ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে লিটনের পায়ে স্পর্শ করে বল উঠে এলেও গলার কাছে যাওয়া ক্যাচটি নিতে পারেননি শান্ত। অবশেষে সেই ভুলের মাশুল দিতে দেরি হয়নি।

তাইজুলের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে হামফ্রিজ সহজ ক্যাচ দেন; ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে তা নেন সাদমান। এরপর শুরু হয় রিভিউর নাটক। প্রথমে মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ থেকে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ম্যাকব্রাইন। পরের বলেও তিনি রিভিউ নেন, ব্যাটে লেগে প্যাডে আসায় আবারও রক্ষা। দুই বলে দুই রিভিউ, দুটিতে বেঁচে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন তিনি। অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নিকেও রিভিউ নিতে হয়। মিরাজের এলবিডব্লিউ আবেদন নাকচ হয়; রিভিউতে দেখা যায় বল লেগ স্টাম্প মিস করত, ‘আনসাইড আম্পায়ার্স কল’-এ বেঁচে যান তিনি। তবে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি হাসান মুরাদ। তার দারুণ টার্নে ভুল স্লগ সুইপ খেলে এলবিডব্লিউ হন বালবার্নি। রিভিউতেও লাভ হয়নি; বল লেগ স্টাম্পের বাইরে লাগত। তার বিদায়ে ভাঙে ১১৯ বলের ধৈর্যশীল ৬৬ রানের জুটি। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন মুরাদ। দুই ইনিংস মিলে ৬ উইকেট শিকার করেন এই স্পিনার।