গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাকে দেখতে দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভাকাক্সক্ষীরা নিয়মিত ভিড় করছেন। তবে দলের পক্ষ থেকে হাসপাতালে ভিড় না করতে অনুরোধ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে রিজভী বলেন, অসুস্থ দেশনেত্রীকে দেখতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ হাসপাতালে ভিড় করছেন। দেশনেত্রীর প্রতি মানুষের আবেগ ও শ্রদ্ধার ফলেই মানুষের উপস্থিতি বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, এ অবস্থায় হাসপাতালে দেশনেত্রীর খোঁজখবর নিতে আসা নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ভিড়ের কারণে দেশনেত্রীসহ অন্য রোগীদের চিকিৎসাসেবায় বিঘœ ঘটছে। এ কারণে বিএনপি ও খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে দলের নেতাকর্মী, সমর্থকসহ শুভাকাক্সক্ষীদের এভারকেয়ার হাসপাতালে ভিড় না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানান রিজভী।
খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা: বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
গতকাল ফজরের নামাজের পর সকাল ৭টার দিকে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক হাসপাতালে গিয়ে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন। সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবিব কয়েকজন নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তাকে দেখতে যান। সকাল ১০টার দিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তাসনিম জারা, দলের দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং চিফ কো-অর্ডিনেটর নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এবং বাংলাদেশ আম জনতা পার্টির মেম্বার সেক্রেটারি তারেক রহমানও বেগম জিয়াকে দেখতে যান। বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারাও তাকে দেখতে গেছেন। দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান এবং যুবদল সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না এবং দলীয় বহু তৃণমূল কর্মী-সমর্থকও হাসপাতালে গিয়ে তার খোঁজ নেন।
হাসপাতাল থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন খায়রুল কবির খোকন। তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান যেকোনো সময় দেশে ফিরতে পারেন মায়ের পাশে থাকার জন্য। খালেদা জিয়াকে সিসিইউ থেকে অপারেশন থিয়েটার এলাকায় নেওয়া হয়েছে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন। দেশের বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে, একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা যাত্রার উপযোগী হলেই তাকে বিদেশে নেওয়া হবে।’
যুবদল সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না দলের নেতাকর্মীদের হাসপাতালে অযথা ভিড় না করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকেরা সার্বক্ষণিকভাবে খালেদা জিয়াকে পর্যবেক্ষণ করছেন। সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ তাকে ভালোবাসে। আমি মহান আল্লাহর কাছে তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।’
এর আগে গত ২৩ নভেম্বর শ^াসকষ্ট নিয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। ফুসফুসের সংক্রমণজনিত জটিলতায় তার শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয়, যা পরবর্তীতে নিউমোনিয়ায় রূপ নেয়। এ ছাড়া আরও অনেক শারীরিক জটিলতা রয়েছে যেমনÑ কিডনি ও লিভারের সমস্যা, আর্থ্রাইটিস এবং ডায়াবেটিস, যা চিকিৎসাকে কঠিন করে তুলেছে।
