রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


জামাল উদ্দিন বাবলু, লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২৫, ১২:৫৭ এএম

ফয়েজের শেষ কথা ‘মা, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে’

জামাল উদ্দিন বাবলু, লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২৫, ১২:৫৭ এএম

ফয়েজের শেষ কথা  ‘মা, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে’

‘মা, আওয়াজ শুনেননি, হ শুনি, কিসের আওয়াজ রে বাবা?’ ‘মা হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে...’ এরপরই কল কেটে দেন মা সবুরা বেগম। কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছেলের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে মুঠোফোনে এটিই ছিল মা-ছেলের শেষ কথা।

সেই রাত, সেই কান্না আজও থামেনি। থামে না মা সবুরা বেগমের নিঃশব্দ বিলাপ।
৩০ বছর বয়সি শহীদ ফয়েজ আহমদ আর কখনো ফিরবেন না, এটা মেনে নিতে পারছে না তার পরিবার। ফয়েজ ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়নের ঝাউডগি গ্রামের আলাউদ্দিন বেপারীর বড় ছেলে। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। বাবা নির্মাণশ্রমিক, পরিবার দিন এনে দিন খায়। সংসারের হাল ধরতে বহু আগেই মালদ্বীপে পাড়ি জমিয়েছিলেন ফয়েজ। ২০২০ সালে করোনায় চাকরি হারিয়ে দেশে ফেরেন। ঢাকায় স্যানিটারি মিস্ত্রির কাজ করে কোনোমতে চলছিল সংসার।

তিন বছরের শিশু রাফিকে নিয়ে টঙ্গীর একটি বস্তিতে থাকতেন স্ত্রী নুরনাহার। সেখান থেকে প্রতিদিনই কাজের উদ্দেশ্যে বের হতেন।

২১ জুলাই বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ডে একটি কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। সহকর্মী কাশেম তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সেদিনই রাতের আঁধারে লাশ গ্রামের বাড়ি পৌঁছায়।

ফয়েজের বাবা আলাউদ্দিন বেপারী বলেন, ‘আমি প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারিনি। ছেলের বউ বলল, মাথায় গুলি লেগেছে। আমি ধরে নিয়েছিলাম, আমার ছেলে আর নেই। এখনো মনে হয়, এই বুঝি ফোনটা বেজে উঠবে, ও বলবে, ‘আসতেছি বাবা।’

‘ছোটবেলা থেকে লজ্জাবতী গাছের মতো শান্ত ছেলে ছিল। একটা কথা না বলে বাসা থেকে বের হতো না। আমার সেই ফয়েজকে কেড়ে নিল গুলি?’ বলতে বলতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন মা সবুরা বেগম।

ফয়েজের পরিবার এখন নিঃস্ব। বাবা একা দিনমজুরি করেন। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। সরকারি সহযোগিতার নামে এখনো চলছে আশ্বাস আর প্রক্রিয়া। শহিদ ফয়েজের নাম যেন হারিয়ে না যায়, তাই প্রতিবেশীরা চান, তার নামে গ্রামের আঞ্চলিক সড়কের নামকরণ হোক। স্মৃতিস্তম্ভ হোক, তার কবর পাকাকরণ হোক। 
ফয়েজের পিতা বলেন, ‘আমি চাই, আমার ছেলে শুধু আমার না, সে দেশের শহিদ। তার নামে যেন কিছু থেকে যায়, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানুক, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কীভাবে প্রাণ দিয়েছিল ফয়েজের মতো ছেলেরা।’ শহিদের রক্ত সহজে মুছে যায় না। ফয়েজ চলে গেছেন, রেখে গেছেন এক সন্তান, বিধবা স্ত্রী আর অগণিত মানুষের চোখের জল।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!