বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আবদুল মুকিত, জকিগঞ্জ (সিলেট)

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৫, ০১:০৫ এএম

ওটি আছে সার্জন নেই, ল্যাব আছে টেকনোলজিস্ট নেই

আবদুল মুকিত, জকিগঞ্জ (সিলেট)

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৫, ০১:০৫ এএম

ওটি আছে সার্জন নেই, ল্যাব  আছে টেকনোলজিস্ট নেই

জকিগঞ্জ উপজেলায় মোট জনসংখ্যা প্রায় ৩ লাখ। আর এই ৩ লাখ লোকের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এই উপজেলায় আছেন মাত্র তিনজন চিকিৎসক। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে অপারেশন থিয়েটার (ওটি) আছে, কিন্তু কোনো সার্জন নেই থিয়েটার ব্যবহারের জন্য। আছে সমৃদ্ধ ল্যাব, কিন্তু সেই ল্যাব সচল রাখার জন্য নেই কোনো টেকনোলজিস্ট।

এভাবেই ‘নাই নাই’ মাতম নিয়ে চলছে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স! দীর্ঘদিন ধরে এমন অচলাবস্থা চললেও দেখার কেউ নেই। ওপর মহল ওয়াকিবহাল থাকলেও কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। ফলে অবহেলায় পিছিয়ে রয়েছে সীমান্ত এলাকার এই উপজেলার স্বাস্থ্যসেবা।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও জনবল সংকটের এই চিত্র স্থানীয়দের ক্ষুব্ধ করে তুলছে। জরুরি ও অন্য স্বাস্থ্যসেবা নিতে সুযোগ থাকার পরও শুধু জনবল না থাকায় উপজেলাবাসীকে দৌড়াতে হয় সিলেট শহরে। এতে যেমন জীবনঝুঁকি বাড়ে, তেমনি অর্থের ব্যয়ও বেড়ে যায় বহুগুণে।

সূত্র জানায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) এবং জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেসথেশিয়া) কাগজে থাকলেও, তারা সবাই অন্য হাসপাতালে সংযুক্তিতে কর্মরত রয়েছেন।

অন্যদিকে, জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন), ডেন্টাল সার্জন, সহকারী সার্জন এবং মেডিকেল অফিসার (হোমিওপ্যাথিক) পদও দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে সহকারী সার্জনের ৭ পদের মধ্যে ৬টিই শূন্য।

নার্সদের ক্ষেত্রেও একই চিত্র। ২৫টি সিনিয়র স্টাফ নার্স পদের মধ্যে কাগজে ১৬ জন দেখালেও ৫ জন অননুমোদিত অনুপস্থিত, ১ জন সংযুক্তিতে অন্যত্র এবং মাত্র ১০ জন নিয়মিত কর্মরত। ৪টি মিডওয়াইফারি পদের মধ্যে ৩টি কাগজে থাকলেও ২ জন অনুপস্থিত ও ১ জন উচ্চশিক্ষায় অন্যত্র গেছেন।

প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও অচলাবস্থা চরমে। ক্যাশিয়ার পদ শূন্য, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ৩ জনের মধ্যে ১ জন ২০১৫ সাল থেকে সাময়িক বরখাস্ত, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ৭ পদের মধ্যে ৬টি শূন্য, ফার্মাসিস্ট ২ পদের মধ্যে ১টি শূন্য এবং ফার্মাসিস্ট (সাবসেন্টার) ২টি পদের সবকটিই শূন্য। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল), মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাবরেটরি) ও কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ সহকারী সব পদই শূন্য। স্বাস্থ্য সহকারী ৫০ পদের মধ্যে ২০টি শূন্য, এমনকি কর্মরতদের মধ্যে একজন ২০১৫ সাল থেকে বরখাস্ত আছেন।

ওয়ার্ড বয়, আয়া, বাবুর্চি, সহকারী বাবুর্চি, পরিচ্ছন্নতা কর্মীসহ চতুর্থ শ্রেণির অধিকাংশ পদও শূন্য। বর্তমানে হাসপাতালের ১৯৮টি অনুমোদিত পদের মধ্যে কাগজে উপস্থিত ১২২ জন, কিন্তু বাস্তবে অন্তত ১৪ জন অনুপস্থিত বা সংযুক্তিতে অন্যত্র কর্মরত।

প্রতিদিন হাসপাতালে ৬৫ থেকে ৭০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। মাসে গড়ে ৭৫ থেকে ৮০টি নরমাল ডেলিভারি সম্পন্ন হয়। অথচ এই সীমিত জনবল দিয়েই চলছে জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম। এ জন্য সঠিক রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে রোগীদের। যদিও হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ওষুধ সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে।

২০২২ সাল থেকে চক্ষু বিভাগ চালু ছিল জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ২ জন প্রশিক্ষিত জনবল দিয়ে চলে আসছিল এই বিভাগ। গত অক্টোবরের শেষ দিকে হঠাৎ ২ জনকেই বদলি করায় প্রান্তিক এই জনপদের মানুষ চক্ষু চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম আব্দুল আহাদ বলেন, আমরা সীমিত জনবল নিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে। শূন্যপদে জনবল চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি।

উল্লেখ্য, জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসনিক অনুমোদন রয়েছে ৫০ শয্যার, কিন্তু জনবল অনুমোদন এখনো ৩১ শয্যার হিসাবেই চলছে, ফলে চিকিৎসাসেবা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম দুই-ই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!