‘খুব করে বাঁচতে চেয়েছি’

চিরকুটে ‘খুব করে বাঁচতে চেয়েছি’ লিখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন। শিক্ষার্থীর নাম সোনিয়া সুলতানা (২৪)। তিনি রাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৯-২০ সেশনের (৬৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন।

গতকাল বুধবার সকালে রাবি সংলগ্ন মির্জাপুর এলাকার ইসলাম টাওয়ারের সাততলার একটি ফ্ল্যাট থেকে সোনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া গেছে। এই ফ্ল্যাটে পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন সোনিয়া। তার বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী বলে জানা গেছে।

সোনিয়ার ঘরে রঙিন কাগজে লেখা চারটি চিরকুট পাওয়া গেছে। একটি চিরকুটে লেখা, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ি না। আমার যেন পোস্টমর্টেম না করা হয়। আম্মু, আব্বু, ধ্রুবতারাকে আমি খুব ভালোবাসি। আমাকে ক্ষমা করে দিও। আল্লাহকে বলো আমাকে মাফ করে দিতে।’

আরেকটি চিরকুটে লেখা, ‘আমি প্রচ- কষ্ট পেয়েছি মা। কবরের আজাব কীভাবে সহ্য করব। আব্বুকে বলবা আমার কবরের পাশে থাকতে। আল্লাহ যেন আমাকে মাফ করে দেন।’

অন্য একটিতে লেখা, ‘আব্বু আম্মু তোমরা আমাকে মাফ করে দিও। তোমাদের জন্য আমি কিচ্ছু করতে পারলাম না। আমার অনেক স্বপ্ন ছিল মা। আমি কিচ্ছু পারলাম না। আব্বু আম্মু শুধু দোয়া করো যেন আমাকে মাফ করে দেন।’ আরেকটিতে লেখা, ‘আমি খুব করে বাঁচতে চেয়েছি বিশ্বাস করো তোমরা। কিন্তু নিজের সাথে যুদ্ধ করে আর পেরে উঠলাম না।’

রাবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিষয়টি মর্মান্তিক। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তবে মৃত্যুর কোনো সঠিক কারণ আমরা জানতে পারিনি। পুলিশও আমাদের কোনো কিছু জানাতে পারেনি। হয়তো পরে জানতে পারব।’

নগরের মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক বলেন, ‘ওড়না গলায় পেঁচানো অবস্থায় মরদেহ ঝুলছিল। এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হয়েছে। সোনিয়া চিরকুটে মরদেহের ময়নাতদন্ত না করার অনুরোধ জানিয়ে গেছে। পরিবারও সেটি চায়নি। তাই ময়নাতদন্ত করা হয়নি। মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে এ নিয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।’