সেন্টমার্টিনের অদূরে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার করতে যাওয়া দুটি ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। গতকাল বুধবার টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী বোট মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তাঁর ঘাটের দুটি ট্রলার সাগরে মাছ শিকারে যায়। এ সময় সেন্টমার্টিনের দক্ষিণে সাগরে ধাওয়া করে ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি।
ধরে নিয়ে যাওয়া দুটি ট্রলারের মধ্যে একটি ট্রলারের মালিককে শনাক্ত করা গেলেও আরেকটির মালিক সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানান সভাপতি সাজেদ আহমেদ।
ধরে নিয়ে যাওয়া একটি ট্রলারের মালিক মো. সৈয়দ আলম বলেন, ‘আরাকান আর্মির কারণে নাফনদী-সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ছে। প্রতিদিন ট্রলারসহ জেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সাগরে মাছ শিকারের সময় ট্রলারের একটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। এরপর আরাকান আর্মি সেটিসহ আরও একটি ট্রলার আটক করে। দুই ট্রলারে থাকা ১৩ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে জেলে-ট্রলার মালিকদের দুর্দিন নেমে আসবে। এমন ঘটনা বন্ধে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।’
সেন্টমার্টিনের বোট মালিক সাইফুল ইসলাম জানান, ‘আরাকান আর্মি মাঝখানে কিছুদিন অপহরণ বন্ধ রাখলেও গত মাস থেকে আবারও শুরু করেছে। জলসীমা লঙ্ঘনের অজুহাতে নিরীহ জেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে জেলেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা শংকিত। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সরকারের টেকসই সমাধান করা জরুরি বলে মনে করি।’
এদিকে মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল আরাকান নেটওয়ার্কের বরাতে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর আরাকান আর্মির উপকূলীয় নিরাপত্তা ইউনিট সমুদ্রপথে টহল জোরদার করে। টহলের সময় আরাকান রাজ্যের জলসীমা অতিক্রম করে মাছ ধরতে থাকা কয়েকটি বাংলাদেশি ট্রলার শনাক্ত করা হয়। সেখানে তারা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ১৮৮ জন বাংলাদেশি জেলে ও ৩০টি নৌকা আটক করে। পরবর্তীতে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু আইন অমান্য করার কারণে এখন ফের এসব ট্রলার ধরা হচ্ছে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়।

