মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি মানুষের সমর্থনের হার আরও কমেছে। দেশটির ৫৮ শতাংশ মানুষ তাঁকে নিয়ে অসন্তুষ্ট। ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার এ হার গত জানুয়ারিতে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সর্বনি¤œ। নতুন এক জরিপের ফলে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইপসোস পরিচালিত জরিপটি গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ট্রাম্পের কার্যক্রমের প্রতি অসন্তুষ্ট হওয়া মানুষের হার বেড়েছে। গত মে মাসের মাঝামাঝি নাগাদ ট্রাম্পের প্রতি অসন্তুষ্ট মানুষের হার ছিল ৫২ শতাংশ। নভেম্বর নাগাদ এ হার বেড়ে ৫৮ শতাংশে পৌঁছেছে। অন্যদিকে তাঁকে সমর্থন করেন এমন মানুষের হার প্রায় ৪০ শতাংশে স্থিতিশীল রয়েছে; যা মে মাসের সমান।
চলতি মাসে ছয় দিন ধরে অনলাইনে জরিপটি চালানো হয়। জরিপের অংশ হিসেবে দেশজুড়ে ১ হাজার ২০০ জন মার্কিন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির কাছে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের বিষয়ে মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা সম্পর্কেও তাদের প্রশ্ন করা হয়েছিল।
জরিপে দেখা গেছে, আগামী বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে রিপাবলিকানদের তুলনায় ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বেশি। চলতি মাসে অনুষ্ঠিত কিছু নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের জয়ের কারণে এমনটা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
নিজেদের ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য হিসেবে পরিচয় দেওয়া প্রায় ৪৪ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটার বলেন, তাঁরা ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোট দিতে ‘খুবই উৎসাহী’। আর রিপাবলিকানদের মধ্যে এই হার ২৬ শতাংশ। প্রায় ৭৯ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন, মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোট দিতে না পারলে তাঁদের আক্ষেপ থাকবে; আর রিপাবলিকানদের মধ্যে এমনটা ভাবেন ৬৮ শতাংশ ভোটার।
আগামী বছর প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫টি আসনের সবগুলো এবং ১০০ সদস্যবিশিষ্ট সিনেটের ৩৫টি আসনে নির্বাচন হবে। বর্তমানে কংগ্রেসের দুই কক্ষই রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণে। সম্প্রতি ভার্জিনিয়া, নিউজার্সি ও নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত গভর্নর নির্বাচনে জয় পেয়েছে ডেমোক্রেটিক দল। এসব নির্বাচনের ফলাফল ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়িয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের দীর্ঘতম শাটডাউন শেষ করতে কংগ্রেসে ভোটাভুটি হওয়ার ঠিক আগে গত বুধবার রয়টার্স-ইপসোস পরিচালিত জরিপটি শেষ হয়।
নতুন ব্যয় বিল পাস করার মধ্য দিয়ে ওই শাটডাউনের (কেন্দ্রীয় সরকারে অচলাবস্থা) অবসান হয়েছে। ওই বিলে ফেডারেল তহবিলের মেয়াদ ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে বলা হয়েছে। গত বুধবার প্রতিনিধি পরিষদে ২২২-২০৯ ভোটে বিলটি পাস হয়। কেন্দ্রীয় সরকারে অচলাবস্থা নিরসনে ছয়জন ডেমোক্র্যাট রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। গত বুধবার রাতে ট্রাম্প ফেডারেল সরকারের ব্যয় বিলে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে ৪৩ দিনের অচলাবস্থা শেষ হয়।
এর আগে গত সোমবার সিনেটে বিলটি পাস হয়েছিল। এদিন রিপাবলিকানদের পাশাপাশি সাতজন ডেমোক্র্যাট এবং একজন স্বতন্ত্র সিনেটর বিলটিকে সমর্থন দেন।
রয়টার্স-ইপসোস পরিচালিত জরিপের অংশ হিসেবে ভোটারদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এখন ভোট হলে তারা কাকে ভোট দেবেন। ৪১ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটার বলেন, তাঁরা ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীকে বেছে নেবেন। ৪০ শতাংশ ভোটার রিপাবলিকান প্রার্থীকে বেছে নেওয়ার কথা বলেন।

