** বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এনইআইআর নীতিমালা রিভিউ করা হবে : আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
** ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার সুযোগ দিয়ে পলিসি তৈরি করতে হবে : জোনায়েদ সাকি
** যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে পরিকল্পিতভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত : রূপালী বাংলাদেশের সম্পাদক ও প্রকাশক মো. সায়েম ফারুকী
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) নীতিমালা রিভিউ করা হবে। যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা হবে। তারপর নীতিমালা পরিবর্তন করা হবে। সাবেক আওয়ামী লীগ বা বর্তমান সরকারের যেসব নীতিমালা মুক্তবাজার অর্থনীতির পরিপন্থি সেগুলো অবশ্যই রিভিউ করা হবে। গতকাল রোববার রাজধানীর হোটেল সারিনায় সেন্টার ফর টেকনোলজি জার্নালিজম (সিটিজে) আয়োজিত ‘এনইআইআর : বাস্তবায়ন কাঠামো, জাতীয় স্বার্থ এবং নাগরিক উদ্বেগ’-বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেওয়া বক্তারা বলেন, দেশে যেখানে কর্মসংস্থান নেই, সেখানে এনইআইআর নীতিমালা করে যারা কর্মসংস্থান তৈরি করেছে তাদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। বক্তারা আরও বলেন, যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে তা পরিকল্পিত যেমন হতে হবে, তেমনি তা কার্যকরের জন্য ন্যূনতম একটি সময় দেওয়া জরুরি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যে পণ্য সবার দরকার সেটার দাম বেশি হতে হবে কেন? ৬৭ হাজার কোটি টাকা ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য বিনিয়োগ করেছে, তার ফল কী? উৎপাদনের নামে স্থানীয়ভাবে যারা মোবাইল ফোন অ্যাসেম্বল করে সুযোগ নিচ্ছে, তারা কতটুকু ভ্যালু অ্যাড করছে? যারা ইনভেস্টমেন্ট করে ব্যবসা করছে তারা প্রতিবছর ভ্যালু এডিশন করছে কি না সেগুলো দেখতে হবে। দুই পক্ষের ট্যাক্সের পরিমাণে সামঞ্জস্য আছে কি না সেটা দেখতে হবে। কোনো পলিসি সুনির্দিষ্ট সিন্ডিকেটের জন্য তৈরি করা হলে সেই ব্যবসা দাঁড়াতে পারে না। এভাবে মনোপলি ব্যবসার সুযোগ দিলে তারা সকল ব্যবসায়ীকে নিয়ন্ত্রণ করবে। তারা অ্যাসেম্বেলিংয়ের নামে এমনিতেই ৫০ শতাংশ সুযোগ বেশি নিচ্ছে, সেখানে অন্য ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ করে একক নিয়ন্ত্রণ নিলে এর ফলাফল ভালো হবে না।
গোলটেবিল বৈঠকে কি-নোট উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর টেকনোলজি জার্নালিজম (সিটিজে)-এর সভাপতি ও দৈনিক সমকালের সহকারী সম্পাদক হাসান জাকির।
গোলটেবিল বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, যেকোনো নীতিমালা করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও জনগণের লাভ হচ্ছে কি না সেটা সবার আগে বিবেচনা করতে হবে। সেই নীতিমালা সামগ্রিক স্বার্থে নাকি সুনির্দিষ্ট সিন্ডিকেটকে সুযোগ দেওয়ার জন্য করা হচ্ছে সেটা দেখতে হবে। কারো পকেট ভারী করার জন্য নীতিমালা করা যাবে না।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশে যেখানে কর্মসংস্থান নেই, সেখানে এনইআইআর নীতিমালা করে যারা কর্মসংস্থান করেছে, তাদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা না করে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি না মেনে একতরফা সিদ্ধান্ত আগের স্বৈরাচারী সরকারকেও হার মানাচ্ছে। শেখ হাসিনার মতো পলিসি করা বিপজ্জনক এবং অত্যন্ত দুঃখজনক। অভ্যুত্থানের সামনে দাঁড়িয়ে এই সরকারেরও শেখ হাসিনার মতো একতরফা নীতি মেনে নেওয়া যায় না। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার সুযোগ দিয়েই পলিসি তৈরি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সম্পাদক ও প্রকাশক মো. সায়েম ফারুকী বলেন, যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে পরিকল্পিতভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। এমন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত নয়, যাতে দেশের সাধারণ জনগণ এবং সাধারণ ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্টাক্ট সেন্টার (বাক্কো)-এর সেক্রেটারি ফয়সল আলিম, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)-এর সভাপতি আমিনুল হাকিম, বেসিসের সহায়ক কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান রাফায়েল কবীর, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রধান প্রতিবেদক আব্বাস উদ্দিন নয়ন, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মোবাইল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আরিফুর রহমান প্রমুখ।

