মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ০৪:৩৭ এএম

তেলাপোকার বিলুপ্তি পৃথিবীতে ঘটাতে পারে দারুণ বিপত্তি

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ০৪:৩৭ এএম

তেলাপোকার বিলুপ্তি  পৃথিবীতে ঘটাতে  পারে দারুণ বিপত্তি

তেলাপোকা, নামটা শুনেই কারো গা ঘিনঘিন করে, কেউ আবার ভয় পান। রান্নাঘরের এক কোণ থেকে অন্য কোণে দৌড়ে বেড়ায় এই তেলাপোকা। লুকিয়ে থাকে ময়লা-আবর্জনার পাশে। আর তেলাপোকা তাড়াতে রীতিমতো ঘাম ছুটে যায় সবার। অনেকেই হয়তো ভাবছেন, এই তেলাপোকার কাজটা কি? পৃথিবী থেকে তেলাপোকা যদি একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, তাহলে হয়তো অনেকেই খুশি হয়। তবে, ভেবে দেখেছেন কখনো তেলাপোকা একদম না থাকলে কী হতে পারে? একটি গবেষণা থেকে যা তথ্য সামনে এসেছে তা জানলে রীতিমতো চমকে যাবেন।

‘প্রসেডিং অব দ্যি ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স’-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় জানা গেছে, তেলাপোকার শরীরে থাকে ব্লাটাব্যাকটেরিয়াম নামের ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়া নাইট্রোজেনকে ভেঙে পুষ্টিতে পরিণত করেÑ যা তেলাপোকাকে যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশেও টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে প্রকৃতির পুষ্টিচক্রকেও সচল রাখে। তাই তাদের যদি বিলুপ্তি হয়, তবে নাইট্রোজেন ভাঙার এই চক্রও ভেঙে পড়বে। তেলাপোকার বিলুপ্তি পুরো পৃথিবীর ইকো-সিস্টেমের জন্য একটি গুরুতর সতর্কতা। জঙ্গলের উৎপাদন, মাটির গুণমান, খাদ্য শৃঙ্খলার ভারসাম্য, ছোট জীব-জন্তুর অস্তিত্ব, সবকিছুর ওপর গভীর আঘাত আসবে।

জঙ্গল পরিচ্ছন্ন করে :

অনেকেই হয়তো জানেন না বাস্তবে কিন্তু আরশোলা থাকে গভীর জঙ্গলে, মানুষের বাড়িতে নয়। তারা শুকনো পাতা, পচা কাঠ, মৃত উদ্ভিদসহ নানা জৈব পদার্থ চিবিয়ে ক্ষুদ্র পুষ্টিকণায় পরিণত করে। তাই যদি আরশোলা বিলুপ্ত হয় তবে বনাঞ্চলে জৈব বর্জ্য জমবে। পচনক্রিয়া মন্থর হবে। তার জেরে মাটির উর্বরতা কমে যাবে। গাছপালা দুর্বল হয়ে পড়বে। ফলে বনাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

খাদ্যশৃঙ্খলের অপরিহার্য অংশ :

টিকটিকি, ব্যাঙ, পাখি, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণীসহ বহু জীব তেলাপোকার ওপর নির্ভর করে। তেলাপোকা না থাকলে খাদ্যাভাব দেখা দেবে। যেসব শিকারি প্রাণী তেলাপোকার ওপর নির্ভর করে, তারা কম খাবারের জন্য প্রতিযোগিতা করতে বাধ্য হবে বা বিকল্প শিকারের দিকে ঝুঁকবে। এতে স্থানীয় বন্য প্রাণীর জনসংখ্যা অস্থিতিশীল হয়ে যাবে। পোকামাকড়কে তুচ্ছ মনে হতে পারে, কিন্তু বাস্তুতন্ত্রে তাদের স্থিতিশীল শক্তি স্থানান্তরের ওপর নির্ভর করে ভারসাম্য বজায় থাকে।

মাটির নীরব প্রাণসঞ্চারক :

তেলাপোকা মৃত উদ্ভিদকে ভেঙে মাটির সঙ্গে মেশায়। এতে মাটির জৈবিক গুণ বেড়ে যায়। অসংখ্য ক্ষুদ্র জীবের জন্য উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলে। তেলাপোকার মধ্যে ব্লাট্টাব্যাকটেরিয়াম নামে একধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা বর্জ্য পণ্যকে অ্যামিনো অ্যাসিড ও ভিটামিনে রূপান্তরিত করে। এটি কঠোর, পুষ্টিহীন পরিবেশে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে তেলাপোকাকে। আর তাই তেলাপোকা এমন পরিবেশে থাকে, যেখানে খুব কম পোকামাকড় বেঁচে থাকতে পারে। এ ছাড়া উদ্ভিজ্জ বর্জ্য ও পশুর মল পচনে সহায়তা করে তেলাপোকা।

বিজ্ঞানীদের মতে, তেলাপোকাবিহীন পৃথিবী মানবসভ্যতার অবসান ঘটাবে না, তবে তেলাপোকারা হারিয়ে গেলে প্রাকৃতিক ব্যবস্থায় নীরবে শূন্যতা তৈরি হবে। বনাঞ্চলে পচন ধীর হবে, মাটি পুষ্টি হারাবে ও খাদ্যশৃঙ্খল কম স্থিতিশীল হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!