বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৫, ০১:৪৩ এএম

সবচেয়ে প্রাচীন গুহাচিত্র নিয়ে অবাক করা তথ্য

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৫, ০১:৪৩ এএম

সবচেয়ে প্রাচীন গুহাচিত্র  নিয়ে অবাক করা তথ্য

সন্ধান মিলেছিল চার বছর আগেই। গুহার গায়ে আঁকা লালচে রঙের এক শূকর। অপটু হাতে আঁকা গুহাচিত্র। ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপের ওই গুহাচিত্র নিয়ে সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এলো আরও নতুন তথ্য। জানা গেল, সম্ভবত কোনো আধুনিক মানুষের হাতে ওই গুহাচিত্র সৃষ্টিই হয়নি।

ইন্দোনেশিয়ার এই গুহাচিত্রটির বয়স অন্তত ৪৫ হাজার পাঁচশ বছর। গুহার মধ্যে ক্যালসিয়াম কার্বনেটের নরম পাথরের গায়ে চার ফুটের এই শূকর-চিত্রটি আঁকা রয়েছে। ওই পাথরের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সেটি কমপক্ষে সাড়ে পঁয়তাল্লিশ বছর পুরোনো। অর্থাৎ, বিশ্বের প্রাচীনতম শৈল্পিক নিদর্শনের মধ্যে এটি একটি। তবে এটি কত পুরোনো সেটি বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় হলো, এই গুহাশিল্পটি কারা তৈরি করেছিল! সুলাওয়েসির লিয়াং টেডং গুহায় এই ছবিটি পাওয়া গেছে। গবেষকদলের অন্যতম সদস্য ম্যাক্সিম অবার্টের কথায়, যারা এই শূকর-চিত্রটি এঁকেছে, তারা বেশ ‘আধুনিক গোছের’ ছিল। ইচ্ছামতো বিষয়বস্তু আঁকার ক্ষমতা এবং সরঞ্জাম উভয়ই ছিল তাদের কাছে।

দীর্ঘ সময় ধরে অনুমান করা হতো, গুহাচিত্র আঁকার মতো সৃজনশীল জ্ঞান শুধু আধুনিক মানুষ বা হোমোসেপিয়েন্সের মধ্যেই সীমিত ছিল। এই উন্নত বুদ্ধি এবং সৃজনশীলতাই আধুনিক মানুষকে তার জ্ঞাতিদের থেকে পৃথক করে তুলেছে বলে মনে করা হতো। যদিও সেই ধারণা আগেই ভেঙেছে। নিয়ানডারথালেরাও (হোমোগণের একটি প্রজাতি, বর্তমানে বিলুপ্ত) যে গুহাচিত্র আঁকত, তার উদাহরণও মিলেছে। স্পেনের তিনটি গুহায় অতীতে কিছু নিদর্শন পাওয়া যায়Ñ গুহার গায়ে লাল রঙের হাতের ছাপ, কিছু চিহ্ন এবং বিন্দু। গবেষণায় উঠে এসেছে সেগুলো ৬৪,০০০ বছরেরও বেশি পুরোনো। অর্থাৎ, ইউরোপে আধুনিক মানুষের আবির্ভাবের অন্তত ২০,০০০ বছর আগে ওই লালচে ছাপগুলো তৈরি হয়েছিল। ওই সময়ে ইউরোপে ঘুরে বেড়াত আধুনিক মানুষের আত্মীয় নিয়ানডারথালেরা। ফলে অনুমান করা হয়, স্পেনের গুহায় ওই কীর্তি নিয়ানডারথালদেরই।

গবেষকদের অনুমান, ইন্দোনেশিয়ার গুহাচিত্রটিও সম্ভবত নিয়ানডারথালদের হাতেই তৈরি। কিংবা অপর এক জ্ঞাতি ডেনিসোভানদের (হোমো গণের অপর এক বিলুপ্ত প্রজাতি) হাতে। তবে এখনই তা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না প্রতœতাত্ত্বিকেরা। কারণ, ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপের সঙ্গে নিয়ানডারথালেদের যোগ ছিল, এমন কোনো প্রামাণ্য তথ্য নেই গবেষকদের হাতে। নিয়ানডারথালেরা যেকোনো এক কালে সেখানে ছিল, তা প্রমাণ করার মতো কোনো জীবাশ্ম সেখানে মেলেনি। ডেনিসোভানদেরও কোনো জীবাশ্ম মেলেনি সেখানে। আধুনিক মানুষের আবির্ভাবের আগে কোন মানব প্রজাতি এখানে বাস করত, তা নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। তাই ওই গুহা থেকে কোনো ডিএনএ’র নমুনা পাওয়া যায় কি না, সেই খোঁজ চালাচ্ছেন প্রতœতাত্ত্বিকেরা।

আধুনিক মানুষের পাশাপাশি অন্য হোমো প্রজাতিও যে গুহাচিত্র আঁকতে জানত, তা প্রথম জানা যায় ২০১৮ সালে। স্পেনের লা প্যাসিগা, মালট্রাভিসো এবং আর্ডেলেসে গুহার মধ্যে ক্যালসাইটের স্তরে পাওয়া গিয়েছিল সেই ৬৪,০০০ বছরের প্রাচীন গুহাচিত্র। ইউরেনিয়াম-থোরিয়াম ডেটিং করে ওই গুহাচিত্রের বয়স উঠে আসে। তারপর থেকেই এ বিষয়ে আরও গবেষণা শুরু হয়। পরে ২০২১ সালে অপর একটি প্রতœতাত্ত্বিক দল ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপের গুহায় এই শূকর-চিত্র খুঁজে পান।

স্পেনের তিন গুহার মতো এ ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতিতে ক্যালসাইট স্তরের ইউরেনিয়াম ডেটিং করা হয়। তাতে জানা যায়, গুহাচিত্রটির বয়স অন্তত ৪৫,৫০০ বছর। সৃজনশীল ভাবনা যে শুধু আধুনিক মানুষের মধ্যেই সীমিত ছিল না, সেই ধারণা আরও জোরালো হয় পর পর এই গবেষণাগুলো থেকে প্রাপ্ত ফলে। গবেষকদের অনুমান, এগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং, একটি বৃহত্তর প্যাটার্নের অংশ। প্রতীকী চিহ্ন বা ছবি দিয়ে মনের ভাব বোঝানোর প্রক্রিয়া যে হঠাৎ করে আফ্রিকায় আবির্ভূত হওয়া আধুনিক মানুষের মধ্যে চলে আসেনি, সে দিকেই ইঙ্গিত করছে নতুন গবেষণাগুলো। প্রতœতাত্ত্বিকদের অনুমান, হোমো সেপিয়েন্সের সঙ্গে ওই গণের অন্য প্রজাতির মধ্যেও ‘আধুনিক জ্ঞান’-এর বিকাশ ঘটেছিল।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!