বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্বর্গভূমি বলে মন্তব্য করেছে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী দুটি দেশ ভারত কিংবা মিয়ানমারের দিকে তাকালে এটি বুঝতে বেশিক্ষণ সময় লাগার কথা নয়। এ দেশে একেবারেই কোনো কিছু ঘটনা এমনটি নয়। সংঘাত মাঝেমধ্যে ঘটে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব সংঘাত রাজনৈতিক কারণে হয়, সাম্প্রদায়িক কারণে নয়।’
গতকাল শনিবার লালমনিরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে বড় হয়েছি, স্কুল-কলেজে গেছি, চাকরি করেছি। একসঙ্গে বাজারে যাই, বসবাস করি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আমরা একসঙ্গে যুদ্ধ করেছি। চব্বিশের জুলাই বিপ্লবেও আমরা একসঙ্গে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ দেশ আমাদের সবার। আমার যেমন অধিকার রয়েছে; একজন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, পাহাড়ি, নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীÑ সবার সমান অধিকার রয়েছে। তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো তাদের অধিকার যেন কেউ ক্ষুণœ করতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করা। সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গুরুত্ব তুলে ধরে ড. খালিদ বলেন, ‘কোনো দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যদি না থাকে, গোষ্ঠীতে-গোষ্ঠীতে কিংবা সম্প্রদায়ে-সম্প্রদায়ে সংঘাত হয়, তাহলে সে দেশ কখনো উন্নত হবে না। সেখানে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না, পর্যটকদের আগমন ঘটবে না।’ তিনি দেশের উন্নয়নের জন্য সব ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
বিগত ১৭ বছরে লালমনিরহাটে উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগাকে দুঃখজনক হিসেবে মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। আপনারা এমন প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন, যিনি লালমনিরহাটকে সোনায় মুড়িয়ে দিতে পারেন। আমরা অভিযোগ শুনতে চাই না, কাজ দেখতে চাই।’
জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মমিনুল হক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা নায়েবে আমির মো. হাবিবুর রহমান, বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এইচ এম বরকতুল্লাহ প্রমুখ।

