দেশে সব ক্ষেত্রে দুর্নীতিতে সয়লাব হয়ে গেছে মন্তব্য করে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘দুর্নীতিকে গলা টিপে ধরা না গেলে এ সমাজ বাঁচবে না।’ তার ভাষায়, ‘এই সমাজ বেঁচে থাকলে একটা ক্ষণভঙ্গুর সমাজ হিসেবে বেঁচে থাকবে। এ রকম সমাজ তো কোনো দেশের নাগরিক কামনা করে না।’ যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার পথে যুক্তরাজ্যে এক দিনের জন্য যাত্রাবিরতি করেন শফিকুর রহমান। গত শুক্রবার লন্ডনের একটি হোটেলে তিনি সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন।
বিগত বছরগুলোতে দেশে দুর্নীতি যেভাবে সর্বক্ষেত্রে বিস্তৃতি পেয়েছে, সে কথা বলতে গিয়ে জামায়াত আমির পাকিস্তান আমলের সঙ্গে এখনকার পরিস্থিতির তুলনা করেন। তিনি বলেন, বিষয়টা এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, পাকিস্তান আমলে আমার নিভুনিভু জ্ঞান-বুদ্ধি ছিল। তখন কোনো জায়গায় কোনো ঘুষখোর অফিসার এলে সারা জেলা জেনে যেত যে এই অফিসারটা ঘুষখোর। আর এখন যদি কোনো সৎ অফিসার আসে, সবাই বলে যে এই একটা মানুষ সৎ। দেখেন অবস্থাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। একেবারে পুরা রিভার্স হয়ে গেছে। এটা খুবই দুঃখজনক। যেই সমাজে দুর্নীতি অনুসঙ্গ হয়ে যায়, নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে যায়, সেই সমাজ মাজা সোজা করে দাঁড়াতে পারে না, মেরুদ- সোজা করে দাঁড়াতে পারে না।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাটাও বিধ্বস্ত। আমাদের সেখানে দুর্নীতির সয়লাব। কোনো জায়গায় নাই সুবিচার। যেখানেই যাবে মানুষ পায় অবিচার। এই অবস্থায় এই দেশ এবং জাতিকে কেউ আর দেখতে চায় না। আমরাও দেখতে চাই না। আপনারাও নিশ্চয়ই দেখতে চান না।’ জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে যে বড় পরিবর্তন এসেছে, সে কথা তুলে ধরে শফিকুর রহমান বলেন, ‘এই যে পরিবর্তনটা হলো, কীসের প্রত্যাশায়? একটাই প্রত্যাশা যে, সমাজে কোনো অনিয়ম এবং বৈষম্য থাকবে না। আর সকল অনিয়ম এবং বৈষম্যের মূলে হচ্ছে দুর্নীতি। সমাজের সব জায়গায় দুর্নীতিবাজরা বসে থাকার কারণে সমাজে মানুষের যে ন্যায্য অধিকার, এটা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। প্রত্যেকটি মানুষ নিগৃহীত।’
প্রবাসীদের আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘ভোটের অধিকার, আমি বলি যে এটা ভেটো পাওয়ার। এটা যদি আপনার হাতে থাকে, অনেক অধিকার আপনার কাছে চলে আসবে। আর এটা যদি আপনার হাতছাড়া থাকে, তাহলে লোক ওয়ান ওয়ে শুধু আপনার কাছ থেকে নিতে চাইবে, আপনাকে আপনার পাওনাটা দিতে চাইবে না।’

