বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাবিবুর রহমান (বাপ্পী)

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৫, ১২:৪৩ এএম

ঢাকার ফুটপাত পরিণত হয়েছে অবৈধ বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু

হাবিবুর রহমান (বাপ্পী)

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৫, ১২:৪৩ এএম

ঢাকার ফুটপাত পরিণত হয়েছে  অবৈধ বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু

রাজধানীর মধ্যে ফুটপাত ও প্রধান সড়ক পথচারীদের নিরাপদ চলাচলের জন্য বরাদ্দÑ সেখানে এখন গড়ে উঠেছে বড়সড় এক ‘অদৃশ্য বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য’। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় ফুটপাত দখল করে প্রতিদিন চলছে লাখ লাখ টাকার লেনদেন, যা পরিচালিত হচ্ছে রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও সংগঠিত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। আর প্রশাসন যেন পালন করছে নীরবতা! ফলে রাজধানীর ফুটপাত আজ শুধু হাঁটার জায়গা নয়Ñ এটি লাখ লাখ টাকার অবৈধ বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু।

জানা গেছে, বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ফুটপাত দখলের নিয়ন্ত্রণ নির্দিষ্ট একাধিক গোষ্ঠীর হাতে। অভিযানে দোকান ভাঙলেও পরদিনই সেই দোকান আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। এলাকাবাসী দাবি করছেÑ এই পুনঃস্থাপনের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়। আর প্রশাসনের এই নীরবতা প্রশ্ন তুলছেÑ এত বড় পরিসরের অবৈধ দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা কেন দেখা যাচ্ছে না?

প্রতিদিন প্রতি দোকান থেকে ৩০০ থেকে ১,০০০ টাকা পর্যন্ত ‘টোল’ নেওয়া হয়। কিছু এলাকায় এই পরিমাণ আরও বেশি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, বেচাকেনা হোক বা না হোক, টাকা দিতে হবেই। আর ব্যবসা শুরু করার আগেই ‘অ্যাডভান্স’ হিসেবে ৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়, যা ফেরতযোগ্য নয়। চাঁদার টাকা সংগ্রহে নিয়োজিত ‘লাইনম্যান’ এবং ‘কালেকশন ম্যান’-এর উপস্থিতি দোকানিদের মাঝে স্থায়ী ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে।

চাঞ্চল্যকর পর্যবেক্ষণ : পার্কিং স্থানেও দোকান! অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মধ্য বাড্ডার  হল্যান্ড সেন্টার শপিং কমপ্লেক্সের  পার্কিং এলাকায়ও গড়ে উঠেছে অস্থায়ী দোকান। যেখানে যানবাহন রাখার কথা ছিল, সেখানে শেড দিয়ে চলছে বাণিজ্য। এটি শুধু অবৈধ দখল নয়Ñ নগর পরিকল্পনার নিয়মের সরাসরি লঙ্ঘন।

নগরের অঘোষিত অর্থনৈতিক রাজত্ব : ফুটপাত দখল এখন শুধুই বিশৃঙ্খলা নয়; এটি রাজধানীর অঘোষিত অর্থনৈতিক রাজত্বÑ যেখানে ক্ষমতা, রাজনীতি, চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি মিলেমিশে তৈরি করেছে একটি ছায়া-অর্থনীতি। নগর বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, পথচারী নিরাপত্তা, নগর শৃঙ্খলা এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জীবন-জীবিকাÑ তিনটিই গভীর সংকটে পড়বে।

এদিকে, রাজধানীর মিরপুর-১ এর ফুটপাতের অবৈধ দোকানগুলো এখনো আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সূত্র দাবি করছে, এসব দোকান থেকে ওঠা লাখ লাখ টাকার বড় ভাগ যাচ্ছে বর্তমান প্রভাবশালী দলের নেতাদের পকেটে। এমন অভিযোগ ভাসমান ব্যবসায়ীদেরও। সরেজমিনে মিরপুরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, সড়ক তো নয়, যেন বিশাল এক বাজার। রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বর থেকে শাহ আলী মাজার পর্যন্ত রাস্তার বেশির ভাগজুড়ে অবৈধ দোকানের রাজত্ব। ফলে হরহামেশাই যানজটে নাকাল এই পথে যাত্রীরা।

এক পথচারী জানান, রাস্তা থাকবে রাস্তার মতন। জনগণ ফুটপাত দিয়ে চলবে কোনো বিশৃঙ্খলা হবে না, যানজট লাগবে না, যানজটের জন্য হাঁটা যায় না। সড়কে ভাসমান দোকানের বিড়ম্বনায় ভুগছে পাশের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, অবৈধ দোকানগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন আওয়ামী লীগের সময়কার প্রভাবশালী নেতা কবির ও জুয়েল বেপারী। ৫ আগস্টের পর কবির পলাতক থাকায়, এখন টাকা ঢোকে জুয়েলের পকেটে।

দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতির মো. দেলোয়ার হোসেন দাবি করেন, এখানে রাস্তা দিয়ে লোক চলাচল করতে পারে না, শুধু হকার বসে থাকে। তারা ছোট ছোট ভ্যান নিয়ে পুরো রাস্তা আটকে রাখে। আগে কবির নেতৃত্ব দিত, এখন জুয়েল নামে একজন আছে। ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুযায়ী, দুই শতাধিক ভাসমান দোকান থেকে বিদ্যুৎ বিলের নামে প্রতি মাসে তোলা হয় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। বছরে যা ২১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আর ফুটপাতে বছরে এ বাবদ চাঁদা নেওয়া হয় ১৬ লাখেরও বেশি। একজন ভাসমান ব্যবসায়ী জানান, আমি ৩টি লাইট চালাই, এ জন্য ৬০ টাকা বিল দিতে হয়। আর ফ্যান ও লাইট জ্বালালে ৫০ টাকা নেয়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!