ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সব খেলার মাঠ যথাযথভাবে সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগে জারি করা এ-সংক্রান্ত একটি রুল যথাযথ ঘোষণা করে গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দী ও বিচারপতি দিহিদার মাসুম কবীরের বেঞ্চ এ রায় দেন। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
এ বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, এক যুগ আগে ২০১২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়, যাতে বলা হয়Ñ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলার মাঠ থাকলেও খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠসহ বড় মাঠগুলো ভাড়া দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সংবাদটি প্রকাশিত হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস গ্রাউন্ড থেকে নির্মাণ মালামাল অপসারণ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে খেলাধুলার কার্যক্রম নিশ্চিত করতে নির্দেশনা চেয়ে ২০১২ সালে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) জনস্বার্থে একটি রিট আবেদন করে।
মনজিল মোরসেদ জানান, ওই রিট মামলার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ কেন সংরক্ষণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। একই সঙ্গে মামলার বিবাদীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস গ্রাউন্ড থেকে নির্মাণ মালামাল সরিয়ে নিতে এবং ছাত্রদের খেলাধুলার কার্যক্রম নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয় এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়।
মনজিল মোরসেদ বলেন, শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল খেলার মাঠ, জগন্নাথ হল খেলার মাঠ, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল খেলার মাঠ, কবি জসীমউদ্্দীন হল খেলার মাঠ, ফজলুল হক হল খেলার মাঠ, মুসলিম হল খেলার মাঠ, ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল খেলার মাঠ এবং রোকেয়া হল খেলার মাঠ রক্ষা এবং সব মাঠ যথাযথ অবস্থায় আনার জন্য এইচআরপিবি এক সম্পূরক আবেদন দাখিল করেছে।
সম্পূরক আবেদনের শুনানিতে মনজিল মোরসেদ বলেন, ঢাকা মহানগর, বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরের পৌর এলাকাসহ দেশের সব পৌর এলাকার খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাশয় আইন, ২০০০-এর বিধান অনুসারে খেলার মাঠের প্রকৃতি পরিবর্তন করা নিষেধ এবং দ-নীয় অপরাধ। তার পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ দখল করে ব্যাবসায়িক মালামাল রেখে ছাত্র-ছাত্রীদের খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আনিছুর রহমান খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পক্ষে আইনজীবী মুনিরুজ্জামান।

