সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের দিন কোনো বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হলে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার দায়িত্ব কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসারও তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের হোটেল পেনিনসুলায় চট্টগ্রাম মেডিকেল ট্রাভেল ফোরামের আয়োজনে ‘মেডিকেল ভ্যালু ট্রাভেল সামিট’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আমীর খসরু কথা বলছিলেন। আগামী সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার বিচারের রায় ঘোষণা ঘিরে কোনো বিশৃঙ্খলা হলে করণীয় কী প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, বিশৃঙ্খলা তো ঠেকাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই দায়িত্ব তো কোনো রাজনৈতিক দলের না। আমাদের এই কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে আস্তে আস্তে। দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে, তাদের দায়িত্ব হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা। আর রায় কোর্ট দেবেন। রায় নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। বিচার করার দায়িত্ব বিচার বিভাগের। এটা তাদের ওপর ছেড়ে দিন। আমরা একটা নিরপেক্ষ বিচার বিভাগ চেয়েছিলাম। আশা করি, একটা নিরপেক্ষ বিচার বিভাগ বাংলাদেশে স্থাপন করা হয়েছে। আগামী দিনে এটাকে আরও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হবে। এই মুহূর্তে আমরা একটা রাজনৈতিক ট্রানজিশনের দিকে যাচ্ছি। নির্বাচনের দিকে, গণতন্ত্রায়ণের দিকে যাচ্ছি, সেদিকে হচ্ছে আমাদের মূল ফোকাস।
নির্বাচনের জন্য দেশের মানুষ অপেক্ষা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, আজকে সবাই ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে। নির্বাচিত সরকার এলে যত সমস্যার কথা এখন বলা হচ্ছেÑ সাংবিধানিক, অর্থনৈতিক সব ধরনের সমস্যার সমাধান হবে।
আমীর খসরু বলেন, দেশে যে সমস্যাগুলো পুঞ্জীভূত হয়েছে, তার সমাধান নির্বাচিত সরকারই দিতে পারবে। এখন রাজনৈতিক পরিবর্তনের দিকে আমরা ফোকাস দিচ্ছি। জনগণের প্রধান চাহিদাÑ গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করে একটি উৎসবমুখর নির্বাচন। ছোটখাটো ইস্যুতে জনগণের মনোযোগ নেই, সবাই চায় নির্বাচন।
এর আগে অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে আমীর খসরু বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবার জন্য ফ্রিতে প্রাথমিক সেবা নিশ্চিত করা হবে। সেমিনার উদ্বোধন শেষে মেডিকেল ভ্যালু ট্রাভেল সামিটের বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন তিনি। দিনব্যাপী সামিটে অংশ নেন চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত ও বাংলাদেশের শীর্ষ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান, মেডিকেল ভ্যালু ট্রাভেল ফ্যাসিলিটেটর, কর্পোরেট প্রতিনিধি ও ট্রাভেল এজেন্সির কর্মকর্তারা।
এদিকে বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, কোনো নির্দেশনা বা প্রজ্ঞাপন দিয়ে সংস্কার হতে পারে না, কোনো দেশেই কখনো তা হয়নি। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আগামীর যে সংস্কার সেটা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সংসদে হবে। এর বাইরে কোনো সংস্কারের সুযোগ নেই।
গতকাল বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাঁশখালী উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসন থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী মরহুম আলহাজ জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।
মরহুমের বড় সন্তান জেলা বিএনপির সদস্য জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীরের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া, পটিয়া বিএনপির ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী এনামুল হক এনাম, বাঁশখালীতে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা, মরহুমের কন্যা আঁখি আলমগীর, চট্টগ্রাম জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (সাবেক) মফিজুল হক ভূইয়া, জেলা বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট ইফতেখার হোসেন চৌধুরী মহসিন, দক্ষিণ বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক শাখাওয়াত জামান দুলাল, বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বুলবুল, অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম, বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র কামরুল ইসলাম হোসাইনী, জেলা পিপি অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক, সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান চৌধুরী, বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান মাস্টার লোকমান, সদস্যসচিব ও সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল হক চৌধুরী, বাঁশখালী পৌরসভা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক রাসেল ইকবাল, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংস্কৃতিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাছির, সাবেক চেয়ারম্যান ইব্রাহিম বিন খলিল, সাবেক চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান মহসিন।

