বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৫, ০৩:২২ এএম

বেনাপোল দিয়ে চার মাসে ভারতগামী যাত্রী কমেছে চার লাখ

বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৫, ০৩:২২ এএম

বেনাপোল দিয়ে চার মাসে  ভারতগামী যাত্রী কমেছে  চার লাখ

ভারতীয় ভিসাপ্রাপ্তিতে নানা জটিলতায় বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে তার আগের অর্থবছরের ৪ মাসের তুলনায় পাসপোর্টধারী যাত্রীর যাতায়াত কমেছে ৪ লাখ ২ হাজার ৮৪৯ জন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর ভ্রমণ খাতে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞা ও একের পর এক শর্ত আরোপে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। এতে ভ্রমণ, চিকিৎসা, ব্যবসা ও উচ্চশিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। তবে ভারতীয়দের ভিসাপ্রাপ্তিতে কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকায় তাদের যাতায়াত স্বাভাবিক রয়েছে।

চেকপোস্ট বন্দর সূত্রে জানা যায়, ভ্রমণ, চিকিৎসা, ব্যবসা ও উচ্চশিক্ষা গ্রহণে প্রতিবছর বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ১৮ থেকে ২০ লাখ পাসপোর্টধারী যাতায়াত করে থাকে। এতে পাসপোর্টধারীরা যেমন সুবিধা পেত, তেমনি ভ্রমণ খাতে ভ্রমণকর বাবদ বাংলাদেশ সরকারের প্রায় ১৫০ কোটি ও ভিসা ফি বাবদ ভারত সরকারের ২০০ কোটি টাকা আয় হতো। গত বছর ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ভারত সরকার বাংলাদেশিদের ভিসা সংক্ষিপ্ত ও নানান শর্ত আরোপ করে। এতে বড় ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়ে ভ্রমণ খাতে। পরবর্তী সময়ে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও ভিসা প্রদান সহজ করেনি দেশটি। বর্তমানে চাহিদা অনুপাতে ভিসা না পেয়ে বিভিন্নভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছেন বাংলাদেশিরা।

বেনাপোল স্থলবন্দরের তথ্য বলছে, গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর এই ৪ মাসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ৬ লাখ ৫ হাজার ৮১৮ জন দেশি-বিদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করেছেন। এর মধ্যে ভারতে গেছেন তিন লাখ ৫৮ হাজার ৯৫২ জন আর ভারত থেকে ফিরেছেন দুই লাখ ৯৬ হাজার ৮৮৬ জন। অপরদিকে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের একই সময়ে ৪ মাসে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করেছেন মাত্র দুই লাখ দুই হাজার ৯৬৯ জন। এ সময়ে ভারতে গেছেন এক লাখ ১৪ হাজার ৭৩৪ জন এবং ভারত থেকে ফিরেছেন ৮৮ হাজার ২৩৫ জন। এ ক্ষেত্রে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৪ মাসের তুলনায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৪ মাসে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত কমেছে চার লাখ দুই হাজার ৮৪৯ জন। এতে ভারত সরকারের ভিসা ফি খাতে রাজস্ব কমেছে প্রায় ৪২ কোটি টাকা আর বাংলাদেশ সরকারের ভ্রমণকরের ৩২ কোটি টাকা রাজস্ব হাতছাড়া হয়েছে।

এদিকে ব্যবসা, স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ ও পড়াশোনার জন্য প্রতিবছর শুধু বেনাপোল বন্দর দিয়েই প্রায় আড়াই লাখ পাসপোর্টধারী বাংলাদেশে আসে। তবে ভিসাপ্রাপ্তিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে কোনো বাধা না থাকায় তাদের যাতায়াত স্বাভাবিক রয়েছে। অন্যদিকে ভারতীয় ভিসা সহজ করার আহ্বান জানিয়েছেন এ দেশের ভুক্তভোগীরা।

ভারত ভ্রমণকারী আতিয়ার রহমান বলেন, ‘কড়াকড়িতে ভিসা পেতে অনেক টাকা ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসা পরিচালনা ও চিকিৎসাতেও। ভিসা সহজ করার অনুরোধ করছি সরকারের কাছে।’

ব্যবসায়ী হায়দার আলী বলেন, ‘আমি ১২ হাজার টাকা দিয়ে ভিসা পেয়েছি। দালাল ছাড়া কোনো ভিসা পাওয়া যায় না। এর আগে সব কিছু ঠিক থাকলেও ভিসা না দিয়ে পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিয়েছে।’

চিকিৎসা ভিসা নিয়ে ভারত থেকে ডাক্তার দেখিয়ে আসা আব্দুল হান্নান জানান, কলকাতার একটি হাসপাতালের এক ডাক্তারকে দেখানোর জন্য ভিসা নিয়েছিলাম। কিন্তু আমার এক আত্মীয় অন্য একজন ডাক্তারকে দেখান। এ কারণে ফেরার সময় পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। প্রায় ৩ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। ভবিষ্যতে আর ভিসা পাব না বলে হুমকি দেয়। অনেকের পাসপোর্টে সিল মেরে দেয়। এতে পরবর্তী সময়ে ভিসা পাওয়া যায় না। অনেক অনুনয়-বিনয় করে ফিরতে পেরেছি।’

বাংলাদেশ ভ্রমণে আসা ভারতীয় নাগরিক সুরজিৎ সাহা ও রেখা সাহা জানান, কলকাতা বাংলাদেশ উপহাইকমিশন থেকে তাদের ভিসা পেতে কোনো সমস্যা হয়নি। স্বাভাবিক নিয়মে ভিসা পেয়েছেন। আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখাসহ ঘোরাফেরার জন্য বাংলাদেশে এসেছি।

বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) শামিম হোসেন যাতায়াতের তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ভিসা জটিলতায় যাত্রী পারাপার অনেক কমে গেছে। সেই সাথে সরকারের রাজস্বও কমছে। সর্বশেষ গত সোমবার বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে গেছেন মাত্র ৯৪০ জন। এর মধ্যে বাংলাদেশি ছিলেন ৫৯০ জন ও ভারতীয় নাগরিক ছিলেন ৩৫০ জন।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!