ঢাকা রবিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৫

যোগদানের পর থেকেই অনুপস্থিত নিয়মিত বেতন-ভাতা নিচ্ছেন শিক্ষক

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৫, ০৭:০৩ এএম

ভোলার লালমোহনে মাদ্রাসাশিক্ষকের বিরুদ্ধে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে এক দিনও মাদ্রাসায় যাননি ওই শিক্ষক। অথচ নিয়মিত বেতন-ভাতা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মাও. লোকমান হোসেন। তিনি উপজেলার নাজিরপুর দারুল আউলিয়া হোসাইনিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক।
জানা যায়, আরবি প্রভাষক হিসেবে মাও. লোকমান ওই মাদ্রাসায় এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে যোগদান করেন। যার ইনডেক্স নম্বর গ০০২৬৯১৭। মাদ্রাসায় চাকরিতে যোগদানের পর থেকে তিনি কখনো ক্লাস নেননি। দিনের পর দিন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান থেকে বঞ্চিত করছেন। আবার হাজিরা খাতায় নিজে স্বাক্ষর না করলেও মাস শেষে সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা সবই হিসাব কষে তুলে নিচ্ছেন তিনি।
একাধিক অভিভাবক বলেন, মাদ্রাসায় শিক্ষকসংকট থাকায় এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন মাও. লোকমান। কিন্তু তিনি মাদ্রাসায় না আসায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে। 
একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, মাও. লোকমান নামের কোনো শিক্ষককে তারা চেনে না। কোনো দিন দেখেনি। 
এই বিষয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও. আবুল হাসেম বলেন, আমি ওই শিক্ষককে ৬ মাসের ছুটি দিয়েছি। একসঙ্গে ৬ মাসের ছুটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি উচ্চস্বরে বলেন, ‘আমি ৬ মাস নয়, ২ বছরের ছুটি দিবো, তাতে আপনাদের কী?’ ছুটি বিষয়ে শিক্ষা অফিসার জানেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সভাপতি ছুটি দিয়েছে, তিনি একজন পীর সাহেব। আপনারা এগুলো নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না।’ 
সভাপতি মো. ফজলুল কবীর আল আযাদ (পীর সাহেব) বলেন, আসলেই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়ে তো আমি বলতে পারবো না, সব বিষয় প্রিন্সিপাল জানে। তবে যতটুকু জানি মাও. লোকমান নিয়োগের পর থেকে না থাকলেও অন্য লোকের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়ান। বেতন-ভাতা তুলেছেন কে? জানতে চাইলে, কিছুই বলেননি তিনি।
অভিযুক্ত মাও. লোকমান হোসেন বলেন, ‘আমি যোগদানের পর এক দিন ক্লাস নিয়েছি,  পরে আর যাওয়া হয়নি। তবে ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসে আমি রেগুলার হবো।’ বেতন-ভাতা উত্তোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা যা ইচ্ছে তাই করেন’ বলে ফোন কেটে দেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আজিজ বলেন, আমি এই বিষয়ে অবগত নই। আমাদের মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার না থাকায় চরফ্যাশনের শিক্ষা অফিসার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। হয়তো এ কারণে তিনিও অবগত নন। লিখিত অভিযোগ এলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।