বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৫, ০১:৩৭ এএম

চরাঞ্চলে বাড়ছে চীনাবাদামের আবাদ

শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৫, ০১:৩৭ এএম

চরাঞ্চলে বাড়ছে চীনাবাদামের আবাদ

শেরপুরের নকলা উপজেলার চরাঞ্চলের নদী তীরবর্তী এবং বালুময় অনাবাদি জমিতে চীনাবাদামের চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নামমাত্র শ্রমে বেশি লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা এই ফসল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। নদীভাঙন বা বন্যা পরবর্তী পতিত জমি চাষের মাধ্যমে এখন আর অব্যবহৃত থাকছে না। ফলে কৃষকরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এবং পতিত জমির সঠিক ব্যবহার হচ্ছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ, প্রণোদনা ও উন্নত জাতের চাষাবাদের কারণে বাদাম চাষের বৃদ্ধি ঘটছে। এটি লাভজনক ফসল হওয়ায় কৃষকরা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

ব্রহ্মপুত্রনদ ও ভোগাই নদীসহ বিভিন্ন শাখা নদীর তীরবর্তী অনুর্বর পতিত বেলে মাটির জমিতে অন্যকোন ফসল না হলেও চীনাবাদামের উৎপাদন ভালো হওয়ায় এ ফসল চাষে ঝুঁকছেন কৃষক। এখানকার উৎপাদিত বাদামের দানা অধিক পুষ্ট হওয়ায় চাহিদা বেশি। উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে চীনাবাদাম চাষের পরিমাণ ও চাষির সংখ্যা। লাভবান হচ্ছেন উপজেলার চন্দ্রকোণা, চরঅষ্টধর, উরফা, পাঠাকাটা ও বানেশ্বরদী ইউনিয়নের অগণিত চাষি। তবে বেশি চাষ হয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের চন্দ্রকোণা ও চরঅষ্টধর ইউনিয়নে এবং উরফা ইউনিয়নের ভোগাই নদীর তীরবর্তী এলাকায়।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুুমে উপজেলায় ২০৮ একর (৮৪ হেক্টর) জমিতে চীনাবাদাম চাষ করা হয়েছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭৭ মেট্রিক টন। উপজেলায় একটিমাত্র প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে। প্রদর্শনী প্রাপ্ত কৃষককে ১০ কেজি বীজ, ২০ কেজি ইউরিয়া, ১০ কেজি ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) ও ১০ কেজি মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) প্রদান করা হয়েছে।

চাষিরা জানান, বাদাম চাষে শুধুই লাভ। বেলে মাটিতে অধিক তাপমাত্রা, পর্যাপ্ত সূর্যের আলো ও মাঝারি বৃষ্টিপাত পেলে চীনাবাদামের ফলন ভালো হয়। এখানে বিভিন্ন জাতের বাদাম চাষ হলেও মাইজচর বাদাম (ঢাকা-১), বাসন্তি বাদাম (ডিজি-২), ঝিংগাবাদাম (এসসি-১২), বারিবাদাম-৮, ডিএম-১ এর ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকরা এ জাতগুলোই চাষ করেন।

চরঅষ্টধর, নারায়ণখোলা, চন্দ্রকোনা, পাঠাকাটা, বানেশ্বরদী, বাছুর আলগা ও উরফাসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বাদাম গাছে ফুল আসা শুরু হয়েছে। বাদাম খেতের সবুজ মাঠের দৃশ্য সবার নজর কাড়ছে, বিশেষ করে শহুরে লোকদের। অনেক অভিভাবক তাদের শিশুসন্তান নিয়ে বিকেল বেলা বাদাম খেত দেখতে যান।

চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুর আলগা দক্ষিণপাড়ার কৃষক ইয়াদ আলী ও আব্দুল কাদিরসহ বেশ কয়েকজন কৃষকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, যে জমিতে অন্য কোনো ফসল উৎপাদন হয় না, সেই জমিতেই ধানের চেয়েও ভালো দামের ফসল চীনাবাদাম উৎপাদন করছেন কৃষক। প্রতি একর জমিতে চীনাবাদাম উৎপাদন হয় ১৫ মণ থেকে ২০ মণ, যার বাজারমূল্য ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা। তারা জানান, বাদাম খেতে প্রয়োজনে প্রতি একরে ইউরিয়া ৩০-৪০ কেজি, টিএসপি ৮০-৮৫ কেজি, এমওপি ৩৫-৪৫ কেজি, জিপসাম ৪৫-৫৫ কেজি প্রয়োগ করলে উৎপাদন ভালো হয়। জমিতে ঘাস হলে জমির ‘জোঁ’ বুঝে দুই একটি নিড়ানি ও জমির প্রকার ভেদে দুই তিনটি সেচ দিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

চরাঞ্চলের উৎপাদিত চীনাবাদাম স্থানীয় খাদ্য, তেল, পশুখাদ্য ও শিল্প কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। খন্দকার দাওয়াখানার স্বত্বাধিকারী হাকিম খন্দকার জসিম উদ্দিন জানান, চীনাবাদামে ৪০-৫০ ভাগ ভোজ্যতেল, ২৫-৩৩ ভাগ প্রোটিন, ৭-৮ ভাগ পানি, ভিটামিন ‘এ’ ও ‘বি’ এবং অন্যান্য উপাদান রয়েছে। এ ছাড়া খইল গবাদি পশু ও মুরগির উৎকৃষ্ট খাদ্য।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মুরসালিন মেহেদী জানান, নদী তীরবর্তী এবং অনাবাদি বালুময় জমিতে চীনাবাদাম চাষ কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নিয়মিত পরামর্শ ও প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষকদের চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!