ঢাকা শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫

লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

উজ্জ্বল চক্রবর্তী শিশির, দুপচাঁচিয়া
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২৫, ০১:৫৪ এএম

হালকা শীতের পরশ এখন দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশ স্পষ্ট। ভোর-সন্ধ্যাজুড়ে কুয়াশার চাদর, রাতে বাড়ছে ঠান্ডার দাপট। এই আবহে শীতবস্ত্রের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। পাতলা কাঁথায় শীত মানছে না, তাই নতুন লেপ-তোষক তৈরি কিংবা পুরোনো লেপ মেরামতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সবাই। গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলায় বহু পরিবার তাদের ঘরে রাখা পুরোনো লেপ-তোষক বের করে রোদে দিচ্ছেন এবং মেরামত করছেন। লেপ-তোষক তৈরির কারিগর সুমন, নাসিম সেখ ও সেলিম মিয়ার মতো কারিগররা জানান, শীতের শুরুতেই তাদের ব্যস্ততা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। চাহিদা থাকায় তুলা বাছাই, ধুনো দেওয়া ও সেলাই, সব কাজেই চলছে টানা কর্মচাঞ্চল্য।

উপজেলার রোডে শহরতলা, সিও অফিস রোড, তেমাথা বাজার, তালোড়া বাজার, চৌমুহনী, জিয়ানগর ও সাহারপুকুর বাজার এলাকায় লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে ক্রেতা ও অর্ডারের চাপ ছিল চোখে পড়ার মতো। দোকানদাররা তুলা ও কাপড় দেখাতে ব্যস্ত, আর কারিগররা দিনরাত সেলাইয়ে মনোযোগী।

তুলা ও কাপড়ের দাম বৃদ্ধির কারণে লেপ-তোষক তৈরির খরচও বেড়েছে। প্রতি কেজি শিমুল তুলা ৪৫০ টাকা, গার্মেন্টস তুলা ১২০ টাকা থেকে শুরু করে জুট ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সিও অফিস রোডের ব্যবসায়ী মো. তোতা মিয়া জানান, এখন একটি লেপ বানাতে গত বছরের তুলনায় ৩০০-৫০০ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। একটি লেপ বিক্রি করে ২০০-৩০০ টাকা লাভ হয়।

উপজেলা রোডে সিয়াম বেডিং হাউসের মালিক সেলিম সেখ বলেন, ‘শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, সাদা তুলা ৮৫-১০০ টাকা। কাপড়ের দামও বেড়েছে। এখন ভালো মানের একটি লেপ বানাতে ১,০০০-১,৫০০ টাকা খরচ পড়ে।’

শহরের তেমাথা বাজারের কারিগর নাসিম সেখ জানান, ‘এখনো তেমন শীত পড়েনি, তবে রাতে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। প্রতিদিন ৭০-১০০টি লেপ-তোষকের অর্ডার আসে। শীত বাড়লে অর্ডারও আরও বাড়বে।’

কম্বল বা আধুনিক শীত পোশাকের ব্যবহার বাড়লেও লেপের প্রতি মানুষের আস্থা আজও অটুট। ক্রেতা আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘দুটি লেপ নিতে এসেছি। তুলার দাম বেশি, তাই লেপের দামও বেড়েছে।’

অপরদিকে নি¤œআয়ের মানুষজন পুরোনো লেপ মেরামত করেই শীত পার করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বোরাই গ্রামের রেহেনা বেওয়া বলেন, ‘নতুন লেপ বানানোর সামর্থ্য নেই। তাই পুরোনো লেপ সেলাই করে ব্যবহার উপযোগী করছি।’