গাজীপুরের কাপাসিয়া প্রধান সড়কে মরা হাঁস-মুরগি, বাসা-বাড়ির ময়লা-আবর্জনা ও বাজারের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। বর্তমানে প্রধান সড়কটি কার্যত ময়লার পাহাড়ে পরিণত হয়েছে। সড়কে ময়লার ভাগাড় জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। আবর্জনার স্তূপ থেকে তীব্র দুর্গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। দুর্গন্ধে সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের যাত্রী, শিক্ষার্থী ও পথচারীরা সমস্যায় পড়ছেন।
এদিকে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে আশপাশের এলাকার সাধারণ মানুষ। এ ছাড়া সড়কের ওই স্থান দিয়ে চলার সময় নাকে রুমাল চেপে যাতায়াত করতে হয়। প্রশাসনের নাকের ডগায় দিনের পর দিন ময়লার স্তূপ জমলেও তা দেখার যেন কেউ নেই। স্থানীয়রা বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। স্তূপাকারে রাখা এসব পচা দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা-আবর্জনার কারণে আশপাশের বসতবাড়িতে থাকা লোকজনের শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগের সৃষ্টি হচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, কাপাসিয়া বাজার সিএনজি-স্ট্যান্ড সংলগ্ন গাজীপুর সদরমুখী পাবুর মোড়ে সড়কের পাশে মরা হাঁস-মুরগি, বাসা-বাড়ির ময়লা-আবর্জনা ও বাজারের বর্জ্য ফেলে পাহাড় সমান স্তূপ তৈরি করা হয়েছে। আবর্জনার স্তূপ থেকে তীব্র দুর্গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এসব ময়লায় খাবারের উচ্ছিষ্ট ভক্ষণ করার সময় পশু-পাখি ও কুকুর-বিড়াল এলোমেলো করে সড়কে ছড়িয়ে রাখছে। ময়লার দুর্গন্ধে পথচারী ও এলাকাবাসীর দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। দুর্গন্ধে সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের যাত্রী, এলাকাবাসী ও পথচারীরা সমস্যায় পড়ছেন। সড়কের ওই স্থান দিয়ে চলাচলের সময় নাকে রুমাল চেপে যাতায়াত করছেন পথচারীরা। স্তূপাকারে রাখা এসব পচা দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা-আবর্জনার কারণে একদিকে নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ, অন্যদিকে আশপাশের বসত-বাড়িতে থাকা লোকজনের শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগের সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ময়লা অপসারণের দাবিতে স্থানীয়রা মানববন্ধন করেছিলেন। তখন ইউএনও তামান্না তাসনীম দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বেশ কয়েকবার অভিযোগ জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের এমন উদাসীনতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। এ সময় এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে সড়কের পাশের ময়লার স্তূপ অবিলম্বে পরিষ্কার করে পরিবেশ সুরক্ষার দাবি জানান।
পাবুর মোড়ের ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, আমার দোকানের পাশেই ময়লার স্তূপ। দুর্গন্ধে ক্রেতারা আসতে চান না। আমি হার্টের রোগী, এই দুর্গন্ধে দোকানে বসে থাকাও কষ্টকর। ব্যবসা ও আয়-রোজগার দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আরেক ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, ময়লা-আবর্জনার কারণে আমরা চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছি। দুর্গন্ধে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা ও বসত-বাড়িতে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আমরা বিভিন্ন রোগে ভুগছি, কিন্তু প্রশাসন শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছে, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল হোসেন বলেন, চারপাশে এমন দুর্গন্ধ ছড়ায় যে পরিবার নিয়ে বাস করাটাই কঠিন হয়ে গেছে। আমরা একাধিকবার উদ্যোগ নিয়েও ময়লা সরাতে পারিনি। যদি উপজেলা প্রশাসন এগিয়ে আসত, তাহলে দুর্ভোগ কমত।
কাপাসিয়ার ইউএনও তামান্না তাসনীম বলেন, সড়কের পাশে ময়লা না ফেলার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাবাবাসী ও বাজার কমিটির পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে নিষেধ করা হয়েছে। এ ছাড়া এ বিষয়ে উপজেলার অন্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা শিগগিরই এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেব।

