*** চরম ভোগান্তিতে উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ট্যাকেরঘাট থেকে মহেশখলা পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন কাজ দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চলচলকারী লক্ষাধিক মানুষ। কাজ শুরুর পর সড়কের দুই পাশে খোঁড়াখুঁড়ি করে মাটি স্তূপ করে রাখা হলেও ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকেই একাধিক ঠিকাদার কাজ ফেলে এলাকা ছেড়ে চলে যায়। এরপর থেকে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। এতে সড়কের স্তূপ করে রাখা মাটি এখন ধুলায় পরিণত হয়ে পরিবেশ দূষণ সৃষ্টি করছে। যানবাহন চলাচলের সময় ধুলাবালিতে পুরো এলাকায় অসহনীয় পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। ফলে শিশু, বয়স্কসহ সাধারণ মানুষ সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছেন। একই সঙ্গে চলাচলকারী যাত্রীরাও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন।
এ ছাড়া সড়কে ফেলে রাখা বালু, পাথর, রডসহ নির্মাণসামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। অসমাপ্ত ঢালাই ও বিভিন্ন স্থানে বের হয়ে থাকা রডের কারণে সড়কের বিভিন্ন অংশ এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ট্যাকেরঘাট, চারাগাঁও, বাগলী ও মহেশখলা এলাকায় সড়কের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক। প্রতিনিয়ত গর্ত ও ভাঙনের কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে।
পথচারী সাজিদ মিয়া রাসেল বলেন, মুখ ঘুরে চলতে হয় সড়কে। নাকে মূখে শুধু ধুলা আর ধুলা। যদি মোটরবাইকে বা সিএনজিতে চলাচল করি তবে গোসল করতে হয়।
সিএনজিচালক সজর মিয়া বলেন, ট্যাকেরঘাট-মহেশখলা সড়কে চলাচল করতে বড় কষ্ট হয়। তেল বেশি লাগে। গাড়ির অবস্থা হয় খারাপ। আমাদের সমস্যা কাকে বলব। শুনেছি ঠিকাদার পালিয়েছে প্রায় দেড় বছর আগে।
কলেজ শিক্ষার্থী সাজ্জাদুর রহমান তারেক বলেন, সড়ক যোগাযোগ খুবই নাজুক। এই সড়কে চলাচল করলে জামা বার বার বদলাতে হয় এবং নিজে গোসল করতে হয়।
স্থানীয় চিকিৎসক ডা. আব্দুস ছুবান বলেন, এখন এলাকায় সর্দি-কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শুকনো মৌসুমে এমনিতেই ধুলাবালি উড়ে। তার ওপর অসমাপ্ত সড়কের কারণে দিনরাত ধুলা উড়ছে।
ডা. আমিনুল হক বলেন, সড়কের ধুলাবালি বসতবাড়িতে ঢুকে মানুষকে অসুস্থ করছে। দ্রুত সড়ক উন্নয়ন কাজ জরুরি হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় হাজি আব্দুল আলীম জানান, সড়কের কাজ না হওয়ায় আমরা এলাকাবাসী মহাবিপদে আছি। হাঁটতে, বসতে-সর্বত্র ধুলাবালি। খাওয়া-দাওয়া থেকে ঘুম সবই অশান্তি।
বাগলী শুল্ক স্টেশনের সভাপতি কামাল হোসেন বলেন, ধুলাবালির কারণে হাঁট-বাজারে যেমন চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে, তেমনি বাজারের দোকানপাটে ধুলাবালি পড়ে মালামাল নষ্ট হচ্ছে এবং দোকানের পরিবেশও নোংরা হয়ে যাচ্ছে। তাই সড়ক উন্নয়ন কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা জরুরি। এ ছাড়া স্থানীয় বাসিন্দা হামিদুল ইসলাম, ব্যবসায়ী মতিশ পাল, আনোয়ার হোসেনসহ অনেকেই জানান যে, সড়কের দুরবস্থা এখন চরমে পৌঁছেছে। তারা অবিলম্বে সড়কের কাজ দ্রুত শুরু করার জোর দাবি জানান।
এ ব্যাপারে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, ট্যাকেরঘাট-মহেশখলা এলাকার যোগাযোগ সড়কের কাজ শুরু হবে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে। ঠিকাদারদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে।

