ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

ন্যায্য দামের দুশ্চিন্তায় রাজবাড়ীর কৃষক

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ০৫:২০ এএম

রাজবাড়ী জেলার মাঠে এখন উৎসবের আমেজ। চারদিকে আমন ধান কাটার আনন্দ, মাড়াইয়ের শব্দ আর নতুন ধানের গন্ধে মুখর গ্রামাঞ্চল। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ বছর জেলায় আমনের ফলন হয়েছে আশানুরূপ। কৃষকরা কাঠাপ্রতি গড়ে চার থেকে সাড়ে চার মণ পর্যন্ত ধান পেয়েছেন। ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে উঠতে শুরু করেছে মৌসুমের নতুন ধান।

তবে ভালো ফলনের আনন্দের মাঝেও দুশ্চিন্তা কাটছে না কৃষকদের। সার, বীজ, শ্রমিক, কীটনাশকসহ উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়ায় ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ার অভিযোগ করছেন তারা। অনেক কৃষক জানান, শেষ বেলার অকালবৃষ্টিতে অনেক জমিতে পানি জমে যায়। এতে একদিকে ধান কাটতে বাড়তি ভোগান্তি, অন্যদিকে কিছু জমিতে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। ধান তুলতে পারলেও বাজারে বিক্রি করে উৎপাদন খরচ তুলতে পারছেন না অনেকেই।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. তারিকুল ইসলাম জানান, সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হলেও কিছু জটিলতার কারণে অনেক কৃষক আগ্রহ হারাচ্ছেন। তবে তিনি বলেন, বাজারদরের তুলনায় সরকারি ধানের দাম এখনো বেশি।

অন্যদিকে কৃষি অধিদপ্তর বলছে, উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি খরচ কমাতে কৃষকদের সার্বিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ভালো ফলনের জন্য কৃষকদের উন্নত জাতের বীজ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে, যাতে উৎপাদন খরচ কমে আসে।

চলতি মৌসুমে রাজবাড়ীর পাঁচটি উপজেলায় মোট ৫৩ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৭০ টন ধান উৎপাদনের, যার বাজারমূল্য প্রায় ৬০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

উৎসবের মৌসুমে ধান ঘরে তুললেও ন্যায্য দামের প্রত্যাশায় এখনো অপেক্ষায় রাজবাড়ীর কৃষকেরা।