আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিন ব্যাটিংয়ে দ্যুতি ছড়ালেন মাহমুদুল হাসান জয়। খেললেন ১৬৯ রানের অপরাজিত ইনিংস। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটাকে সর্বোচ্চ ইনিংসে রূপান্তর করেছেন মাহমুদুল। বাংলাদেশ ওপেনারের টেস্টে আগে সর্বোচ্চ ছিল ১৩৭ রান। ২০২২ সালে ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই ইনিংসটি খেলেছিলেন মাহমুদুল। এবার ক্যারিয়ার-সেরা ইনিংস খেলে ডাবলের পথে ছুটছেন এই তরুণ ব্যাটসম্যান। মাহমুদুলের সেঞ্চুরির দিন নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয়বার এক ইনিংসে বাংলাদেশের প্রথম তিন ব্যাটসম্যান ফিফটি পেলেন। ৮০ রানে সাদমান আউট হলেও মুমিনুল ৮০ রান অপরাজিত থেকে দিনের খেলা শেষ করেন। এর আগে প্রথমবার ২০১০ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে এমন কীর্তি দেখান বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে ২০১৫ সালের পর গতকালই সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি হয়েছে। ওপেনিংয়ে সাদমান ও মাহমুদুল ১৬৮ রানের জুটি গড়েন। সব মিলিয়ে ওপেনিং জুটিতে টেস্টে এটি বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ।
চা-বিরতির আগেই সেঞ্চুরির একদম কাছে চলে গিয়েছিলেন মাহমুদুল। বিরতির পর ফিরে এসে মাইলফলক স্পর্শ করতে দেরি করলেন না ডানহাতি এই ওপেনার। ১৯০ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি পেয়েছেন তিনি। নিজের চতুর্থ ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন মাহমুদুল। এরপর ৩০ ইনিংস পর তিনি আবার পেলেন শতকের দেখা। মাঝের সময়টায় তার অধারাবিকতা ছিল প্রকট। এই সেঞ্চুরির আগের ১৭ ইনিংসেও ছিল না কোনো ফিফটি। আয়ারল্যান্ডকে পেয়ে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে রানের খরা কাটিয়ে নিজের জায়গা থিতু করেছেন মাহমুদুল। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির দিকে ছিলেন দুই ওপেনারই। আয়ারল্যান্ড বোলাররা যখন এই দুজনকে নিয়ে প্রায় অসহায়, তখন সুযোগ করে দেন সাদমান। অল্পের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করে ফেরেন তিনি। তবে এখনো কোনো ভুল করেননি মাহমুদুল। আঁটসাঁট ব্যাটিংয়ে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেছেন, তাকিয়ে আছেন বড় কিছুর দিকে। বুধবার সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিনের চা-বিরতি পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ১৯৮ রান। মাহমুদুলের সেঞ্চুরির পর এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। মাহমুদুলকে সঙ্গ দিয়ে দলের রান বাড়িয়ে নেন মুমিনুল। প্রথম সেশনে ২৪ ওভারেই বিনা উইকেটে ১০৯ রান তোলা বাংলাদেশ দ্বিতীয় সেশনে তুলেছে ৮৯ রান, খেলেছে ৩১ ওভার। এ সময় হারিয়েছে সাদমানের উইকেট। খরুচে থাকা আইরিশ বোলারদের এই সেশনে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ পেতে দেখা গেছে। বাংলাদেশও পরিস্থিতি বুঝে ঝুঁকি নেয়নি খুব বেশি। ৮০ রানে সাদমান ম্যাথু হ্যামফ্রিসের বলে কাট করতে যান, বল তার ব্যাটের নিচের দিকে লেগে জমা পড়ে কিপারের গ্লাভসে। মাঠের আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে সাদমানকে ফেরায় আয়ারল্যান্ড। মুমিনুল ক্রিজে এসে দ্রুতই মানিয়ে যান। দ্বিতীয় উইকেটে হয়ে গেছে ৩০ রানের জুটি, যার ২১ রানই নিয়েছেন মুমিনুল। ৯০ পার করার পর মাহমুদুল ঢুকে যান খোলসে। তিন অঙ্ক পেরিয়ে যাওয়ার পর বেশ ফুরফুরে দেখায় তাকে। মাহমুদুলের সামনে এবার ডাবল সেঞ্চুরির হাতছানি।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন