ঢাকা শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫

রোনালদোর লাল কার্ড

পর্তুগালের হারের গল্প

মাঠে ময়দানে ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২৫, ০২:৪০ এএম

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল পর্তুগাল। এ ম্যাচে জিতেনি তারা। তাদের হারের হতাশার সঙ্গে যুক্ত হয় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার ঘটনা। যত দুয়োই দেওয়া হোক না কেন, ‘গুড বয়’ হয়ে থাকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা রাখতে পারলেন না রোনালদো। মেজাজ হারিয়ে হলেন বহিষ্কার। তার আগেই ২ গোল হজম করা পর্তুগাল পরেও পারল না ঘুরে দাঁড়াতে। অসাধারণ এক জয়ে বিশ^কাপে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখল রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড। বৃহস্পতিবার রাতে রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচটি ২-০ গোলে জিতেছে আইরিশরা।

আভিভা স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২টি গোলই করেছেন ট্রই প্যারোট। বাছাইয়ে প্রথম তিন ম্যাচে জয়ের পর, গত রাউন্ডে হাঙ্গেরির বিপক্ষে ঘরের মাঠে শেষ দিকে গোল হজম করে ২-২ ড্র করে পর্তুগাল। আর এই পরাজয়ে তাদের বিশ^কাপ ভাগ্য এখন পড়ে গেল কিছুটা অনিশ্চয়তায়। এই হারের পরও অবশ্য ‘এফ’ গ্রুপের শীর্ষেই আছে পর্তুগাল, পাঁচ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে। সমান ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে হাঙ্গেরি। তৃতীয় স্থানে আয়ারল্যান্ডের পয়েন্ট ৭। এই তিন দলেরই সুযোগ আছে সরাসরি ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়ার।

ম্যাচে পজেশন রাখায় এবং আক্রমণে আধিপত্যের মাঝে গোলরক্ষকের ভুলে ১৬তম মিনিটে গোল খেতে বসেছিল পর্তুগাল। প্রথম শট নিতে দেরি করেন দিয়োগো কস্তা, এরপর প্রতিপক্ষের ট্রই প্যারোট এগিয়ে এলে তড়িঘরি করে তার পায়ে শট মেরে বসেন তিনি। খেলার ধারার বিপরীতে পরক্ষণে এগিয়েও যায় আইরিশরা। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেড করে গোলমুখে পাঠান লিয়াম, আর হেডেই বাকি কাজ সারেন ফরোয়ার্ড প্যারোট। গোল পেয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে স্বাগতিকেরা। সুযোগ পেলেই করতে থাকে পাল্টা আক্রমণ। ভাগ্য সহায় হলে ৩৮ মিনিটে আরেকটি গোল পেতে পারত তারা। তবে চিডোজি ওগবেনের কোনাকুনি শটটি দূরের পোস্টে লাগলে সেই যাত্রায় বেঁচে যায় পর্তুগাল। তবে, প্রতিপক্ষের রক্ষণে তেমন ভীতি ছড়াতে না পারা পর্তুগাল বিরতির আগেই দ্বিতীয় গোল হজম করে। ৪৫ মিনিটে সতীর্থে থ্রু বল পেয়ে ডি-বক্সে একজনকে কাটিয়ে নিখুঁত শটে কাছের পোস্ট ঘেঁষে জালে জড়ায় প্যারোট। প্রথমার্ধে তিন-চতুর্থাংশের বেশি সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ১৫ শট নিয়ে কেবল তিনটি লক্ষ্যে রাখতে পারে রোনালদো-ফেলিক্সরা, সেগুলোও অবশ্য গোলরক্ষকের কঠিন পরীক্ষা নিতে পারেনি।

আর এই সময়ে আয়ারল্যান্ড ছয় শটের তিনটি লক্ষ্যে রেখেই জয়ের পথে এগিয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণ আরও জমাট করে তোলে আয়ারল্যান্ড। তাদের ডি-বক্সে ঢুকতেই পারছিল না রোনালদোরা। একের পর এক আক্রমণ বিফলে যাওয়া এবং প্রতিপক্ষ সমর্থকদের দুয়োয় ঘণ্টাখানেক পর মেজাজ হারিয়েই ফেলেন রোনালদো। একটি ফ্রি-কিকের সময় প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে তাদের ডিফেন্ডার ও’শেয়াকে কনুই মেরে বসেন তিনি। রেফারি প্রথমে হলুদ কার্ড দিলেও পরে ভিএআর মনিটরে দেখে সরাসরি দেখান লাল কার্ড।

ধীরগতিতে মাঠ ছাড়ার সময়ও আপত্তিকর আচরণ করেন আন্তর্জাতিক ফুটবলের রেকর্ড গোলদাতা; স্বাগতিক সমর্থকদের ব্যঙ্গ করে দেন করতালি। জাতীয় দলের হয়ে ২২৬ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এই প্রথম লাল কার্ড দেখলেন রোনালদো। শেষ কয়েক মিনিটে আক্রমণের ঝড় তোলে পর্তুগিজরা। কিন্তু ব্যর্থতার জাল এদিন আর ছিড়তে পারেনি তারা। পুরো ম্যাচে গোলের জন্য ২৭ শট নিয়ে কেবল ৫টি লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা! টানা দুই ম্যাচে ড্র ও পরাজয়ে আত্মবিশ্বাসে হয়তো কিছুটা চোট লাগল পর্তুগালের। তবে শেষ ম্যাচ গ্রুপের তলানির দল আর্মেনিয়ার বিপক্ষে হওয়ায়, সরাসরি বিশ্বকাপে ওঠার আশা ভালোভাবেই করতে পারে ২০১৬ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নরা।