ঢাকা মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৫

যুব হকি বিশ্বকাপে উজ্জ্বল আমিরুল

মাঠে ময়দানে প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২৫, ০৭:৫২ এএম

ভারতে জুনিয়র হকি বিশ^কাপে প্রথমবার খেলছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়াই করে হেরেছে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। পরের ম্যাচে এশিয়ান হকির পরাশক্তি দক্ষিণ কোরিয়াকে ৩-৩ গোলে রুখে দিয়েছে তারা। এই দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করার কীর্তি গড়েছেন আমিরুল ইসলাম। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে পয়েন্ট অর্জন করেছে বাংলাদেশ। ছয় গোল করা আমিরুল দুই ম্যাচেই সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন। ফরিদপুরের গর্ব ও বিকেএসপির সাবেক শিক্ষার্থী আমিরুল জানালেন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারের ম্যাচে ম্যাচসেরা হয়ে অবাক হয়েছেন তিনি। আমিরুল বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম জয়ী দল অস্ট্রেলিয়া থেকেই কেউ ম্যাচসেরা হবে। কিন্তু দেখলাম হারলেও বাংলাদেশ থেকে ম্যাচসেরা হয়েছে। এটা আসলেই খুবই গর্বের, দেশের হয়ে প্রথম বিশ^কাপে বাংলাদেশের একজন ম্যাচসেরা হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্যও গৌরবের, এরপরও দল জিতলে বা পয়েন্ট পেলে সেটা আরও বেশি সুখকর হতো। অস্ট্রেলিয়া অনেক শক্তিশালী দল তাদের বিপক্ষে আমরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী ভালোই খেলেছি।’

বিশ্বকাপে ছয়টি গোলই পেনাল্টি কর্নার থেকে পেয়েছেন আমিরুল। বাংলাদেশের পেনাল্টি কর্নার স্পেশালিস্ট চয়ন, আশরাফুলরা। তাদের ছাপিয়ে যেতে চাইবেন আমিরুল। তিনি বলেন, ‘চয়ন ভাই, আশরাফুল ভাই অনেক বড় মাপের খেলোয়াড়। আমার বাড়ি ফরিদপুর। চয়ন ভাইয়ের গল্প শুনেই বেড়ে ওঠা। সিনিয়র জাতীয় দলেও পেনাল্টি কর্নারের মাধ্যমে গোল করে দলকে জেতাতে চাই। তাদের মতো দেশকে অনেক দিন সার্ভিস দিতে চাই। আমার পেনাল্টি কর্নারে সাফল্যের পেছনে পজিশন ও পাওয়ারের সমন্বয় একটা বিশেষত্ব বলব। সঠিক সময় সঠিক পজিশনে সঠিকভাবে হিট করতে পারছি।’

দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ প্রসঙ্গে আমিরুল বলেন, ‘তিন গোলে পিছিয়ে থেকে সমতা আনা কঠিন ছিল। তিন গোলই আমি করেছি, বাংলাদেশ বিশ্বকাপে প্রথম পয়েন্ট আনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পেরে তৃপ্ত। দ্বিতীয় ম্যাচে আশাবাদী ছিলাম যে ম্যাচসেরা হতে পারি।’ ফুটবল, ক্রিকেটে সাধারণ মানের অনেক খেলোয়াড় বছরে লাখ লাখ টাকা আয় করেন। সেখানে দেশের তৃতীয় প্রধান খেলা হকির খেলোয়াড়দের আয় খুবই সীমিত। যোগ্যতা-সামর্থ্য প্রমাণের পরও আর্থিক এই সংকট মাঝেমধ্যে আফসোস বাড়ায় কি না? আমিরুল বলেন, ‘আমি বাস্তবতায় বিশ্বাসী। ফুটবল, ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বেশি, তাদের আয়ও বেশি হবে স্বাভাবিক। আমি নিজের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট। আমি মুসলিম, রিজিকে বিশ্বাসী।’ নেদারল্যান্ডসের কোচ আইকম্যানের মাধ্যমে অনেক কিছুই শিখছেন হকি খেলোয়াড়রা। শিখছেন আমিরুলও। নিজের ক্যারিয়ারের লক্ষ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি চাই, সিনিয়র দলের হয়েও বিশ্বকাপ খেলতে ও হ্যাটট্রিক করতে। জুনিয়র দলের হয়ে ইতোমধ্যে ৩০ গোল করেছি। ২০২২ সাল থেকে সিনিয়র দলে খেলছি, সিনিয়র দলেও তিন গোল রয়েছে। যখন ক্যারিয়ার শেষ করব তখন চাই ম্যাচের সমান সমান যেন গোলসংখ্যা থাকে।