বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ১০:৫১ পিএম

হত্যার হুমকির পর প্রেমিকের বাড়ির উঠানে প্রেমিকার মরদেহ

যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ১০:৫১ পিএম

নিহত নাদিরা খাতুন

নিহত নাদিরা খাতুন

যশোরে হত্যার হুমকির দুই দিন পর প্রেমিকের বাড়ির উঠানের আমগাছ থেকে কিশোরী নাদিরা খাতুনের (১৬) মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (০৮ ডিসেম্বর) গভীর রাতে সদর উপজেলার ইছালী ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মঙ্গলবার (০৯ ডিসেম্বর) দুপুরে লাশের ময়নাতদন্ত যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে সম্পন্ন হয়।

নিহত নাদিরা রামকৃষ্ণপুর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী মকতুল হোসেনের মেয়ে ও ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। নাদিরার মা বলেন, নাজমুল আমার একমাত্র মেয়েকে বাঁচতে দিল না। নাজমুলের পরিবারের লোকজন মিলে নাদিরাকে হত্যা করেছে। ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে মৃতদেহ গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

নাদিরার মা শিল্পী বেগম জানান, গত ২ বছর ধরে আমার মেয়ে নাদিরার সাথে প্রেমের সম্পর্ক রামকৃষ্ণপুর গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে নাজমুলের। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নাজমুল শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। ওই দৃশ্য গোপনে ক্যামেরায় ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালের হুমকি দিয়ে মোটা অংকের টাকাও আদায় করে। গত মাসে নাজমুল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নাদিরাকে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে কয়েকদিন রেখে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। নাজমুল প্রেমের নামে আমার একমাত্র মেয়ের সাথে প্রতারণা করেছে। দেহ ভোগ ও আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। দুই দিন আগেও নাজমুলের চাচাতো ভাই মিরাজুল আমার মেয়েকে হত্যার হুমকি দেয়। হুমকির দুই দিন পর তাদের বাড়ির উঠানের আমগাছে আমার মেয়ের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেল।

শিল্পী বেগম আরও জানান, নাদিরা নাজমুলের জন্য পাগল ছিল। তাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করতে রাজি ছিল না। বিয়ের দাবি নিয়ে আগেও দুই দিন নাজমুলের বাড়িতে যায় নাদিরা। কিন্তু পরিবারের লোকজন তাকে তাড়িয়ে দেয়। চাকরির সুবাদে এখন নাজমুল ঢাকায় থাকে। বিয়ের কথা বললেই বলে- তুমি আমাদের বাড়িতে গিয়ে বাবা-মাকে রাজি করাও। সোমবার (০৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নাজমুলের সাথে নাদিরার প্রায় ২০ মিনিট মোবাইলে কথা হয়। এরপর রাতে নাদিরা ওই বাড়িতে যায়। কিন্তু এবার লাশ হয়ে ফিরে এসেছে।

নাদিরার মা'র অভিযোগ, নাজমুলের পরিবার নাদিরাকে শ্বাস রোধে হত্যা করেছে। ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে মৃতদেহ বাড়ির উঠানের আমগাছে ঝুলিয়ে রেখেছে। পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করলে সত্য বেরিয়ে আসবে- এ কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

নিহতের স্বজনরা জানান, নাজমুল ও তার স্বজনরা নাদিরাকে প্রায়ই হুমকি দিত। ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতানোর চেষ্টা করেছে তারা। এ ঘটনায় নাজমুল ছাড়াও তার সহযোগী মিরাজুল ইসলাম, ফায়জুর, নাঈম, টেপা হোসেন ও বাবুর নামে কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিল নাদিরা। এরপর থেকে তারা ক্ষুব্ধ ছিল। এরই জের ধরে নাদিরাকে খুন করা হতে পারে। মঙ্গলবার রাতে পারিবারিক কবরস্থানে নাদিরার দাফন সম্পন্ন হয়।

ঘটনার পর থেকে নাজমুলের পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তাদের ঘনিষ্ঠ দুই জন দাবি করে, ওই রাতে বিয়ের দাবি নিয়ে নাদিরা প্রেমিক নাজমুলের বাড়িতে যায়। সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় নাদিরা আমগাছে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই শিমন হালদার জানান, নাদিরার মৃত্যু নিয়ে দুই পক্ষ ভিন্ন দাবি করছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিক অবস্থায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে হত্যা না আত্মহত্যা নিশ্চিত হওয়া যাবে।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!