ভোলা-বরিশাল সেতুর কাজ শুরু না হওয়া ও স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভে তিন উপদেষ্টার গাড়ির সামনে শুয়ে প্রতিবাদ করেন বঞ্চিত ভোলাবাসী। দীর্ঘদিন ধরে সেতুর কাজ শুরু না হওয়া এবং স্থানীয় জনগণের অধিকার নিশ্চিত না হওয়ায় এই প্রতিবাদে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে ভোলা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষুদ্ধ জনতা তিন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ রাখেন। এসময় স্থানীয়রা নানা ধরণের স্লোগান দিতে থাকে এবং উপদেষ্টাদের বহন করা গাড়ির সামনে শুয়ে পথ আটকে দেন। প্রায় ২০ মিনিট উপদেষ্টারা কার্যালয় চত্বরের বাইরে বাধ্য হয়ে অবস্থান করতে বাধ্য হন।
উপদেষ্টারা হলেন সেতু, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।
ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণসহ পাঁচ দফা দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় জনগণ দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। সরকারি পক্ষ পূর্বে জানিয়েছে, সেতুর কাজ আগামী বছরের জানুয়ারিতে শুরু হবে।
এই প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় স্থানীয়রা উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের কাছে সেতুর সঠিক সময়সূচি জানতে চান। উপদেষ্টা বলেন, ‘ভোলা-বরিশাল সেতু পূর্বের ডিজাইন অনুযায়ী নির্মাণ সম্ভব নয়। নতুন ডিজাইন প্রক্রিয়াধীন। কাজ শুরু হবে ডিজাইন সম্পন্ন হওয়ার পর, সম্ভবত জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে।’
এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে উপস্থিত জনতা স্লোগান দিতে থাকে। দুই যুবক গাড়ির সামনে শুয়ে প্রতিবাদ জানায়। পরে অন্যান্য বিক্ষুদ্ধরা উপদেষ্টাদের ঘিরে রাখে। এ সময় শহরের অন্যান্য রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
দীর্ঘ সময় ধরে অবরুদ্ধ থাকার পর তিন উপদেষ্টা জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে বেরিয়ে জেলা সার্কিট হাউজের উদ্দেশ্যে যান। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তরিকুল ইসলাম কায়েদ বলেন, ‘উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান পূর্বে জানিয়েছিলেন ডিসেম্বরেই দৃশ্যমান কাজ শুরু হবে। কিন্তু আজ জানানো হলো আরও ছয় মাস বিলম্ব হবে। তাই আমরা তার এবং শেখ বশির উদ্দিনের পদত্যাগ দাবি করছি।’
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাহাদাৎ মো. হাসনাইন পারেভজ জানান, ‘ভোলা-বরিশাল সেতু ও গ্যাসের দাবিতে বিক্ষুদ্ধ জনতা উপদেষ্টাদের গাড়ির সামনে শুয়ে প্রতিবাদ করে। পরে তাদের সরিয়ে আনা হয় এবং নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী উপদেষ্টারা চলে যান।’
উপদেষ্টাদের সঙ্গে স্থানীয় নেতাদের আলোচনার পাশাপাশি জনতার ক্ষোভ ও দাবি কার্যক্রমে সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়। ভোলাবাসী দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের অগ্রগতি এবং সময়সীমা জানতে চায়, যা স্থানীয় জনগণের জন্য এক বড় প্রত্যাশার বিষয়।


