ঢাকা সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫

‘হাসিনার পতনে জনগণের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা ছিল’

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২৫, ১০:০১ পিএম
বক্তব্য দেন জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ সংস্কারের পাশাপাশি একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এই দুইটি—সংস্কার ও নির্বাচন—একসাথে এগিয়ে নিতে হবে। সংস্কারের মধ্য দিয়েই একটি ঐক্যবদ্ধ, সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।

রোববার (২০ জুলাই) বিকেলে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের পঞ্চাশী গ্রামে আয়োজিত শহীদ কামরুল ইসলাম রাব্বীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনার পতন কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা নির্দিষ্ট দলের মাধ্যমে ঘটেছে। বাস্তবে এ দেশের সর্বস্তরের মানুষ শেখ হাসিনার পতন চেয়েছে। সম্মিলিতভাবে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে জনগণই এই পতন ঘটিয়েছে। বিএনপির নেতৃত্বে জনগণ একাত্মতা ঘোষণা করেছে। তবে আমরা দেশটিকে কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে তুলে দিইনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করেছি একটি দমন-পীড়নের সরকারের পতনের জন্য, যাতে আর কোনো সরকার জনগণের ওপর অত্যাচার করতে না পারে। যারা আবার সেই পথে হাঁটছে, তাদের সংশোধন হওয়া জরুরি। জনগণের আস্থা হারানোর ঝুঁকি আছে সবার জন্য।’

ফরিদুল কবীর শামীম অভিযোগ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্রে পড়েছে। বিভিন্ন গোষ্ঠী তাদের দলে টানছে, ভিন্ন দলীয় ব্যানারে তাদের কার্যক্রম চালাতে সহায়তা করছে। এসব নীলনকশা বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেবে না।’

তিনি শহীদ রাব্বীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘রাব্বীর কবরের দিকে তাকান—এই শহীদের রক্তের বিনিময়েই আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। সেই বাংলাদেশকে কেউ কলুষিত করলে, সে যে দলেরই হোক, তাকে প্রতিহত করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিএনপি একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চায়, সেই পথে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওনা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সুরুজ্জামান, শহীদ রাব্বীর বন্ধু ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা ছাত্র সংগঠনের আহ্বায়ক একরামুল হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম, আওনা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মনিরুজ্জামান মানিক এবং শহীদ রাব্বীর বড় ভাই অন্তর মিয়া প্রমুখ।

অনুষ্ঠান শেষে শহীদ কামরুল ইসলাম রাব্বীর আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। পরে গরিব ও অসহায় মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়।

কামরুল ইসলাম রাব্বী জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের পঞ্চাশী নয়াপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে। তিনি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ত্রিপলি ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং পাশাপাশি ওয়ালটন কোম্পানিতে চাকরি করতেন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র ও জনতার যৌথ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন তিনি। ২০ জুলাই আন্দোলনে যোগ দিতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ভাড়া বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পথে হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন রাব্বী। পরবর্তীতে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এনে দাফন করা হয়।