ঠাকুরগাঁওয়ে চাচাকে বাবা বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পুলিশে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আবু সামাদ নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলীকে নিজের বাবা পরিচয় দেখিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রও তৈরি করেন।
আবু সামাদ সদর উপজেলার ঢোলারহাট ইউনিয়নের উত্তর বোয়ালিয়া গ্রামের আব্দুর রব–চন্দ্র বানু দম্পতির সন্তান। তারা ৩ ভাই ও ২ বোন। তাদের মধ্যে আবু সামাদের জন্ম ১৯৯৪ সালের ৩০ এপ্রিল। আর তার চাচা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলী নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খগা খড়িবাড়ি গ্রামে বসবাস করছেন। জানা গেছে, আবু সামাদের বাবার বাড়িতে নদী ভাঙন হলে ঠাকুরগাঁওয়ে এসে বসবাস শুরু করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সামাদ ঢোলারহাট ইউনিয়নের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে হারাগাছ পাড়া জান্নাতুল ফেরদৌস মাদরাসা থেকে ২০০৯ সালে দাখিল পাস করেন। এরপর ২০১০ সালে ভর্তি হন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়াশোনা শেষ করে পুলিশ বিভাগে চাকরি নেন। বর্তমানে তিনি কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি থানায় কর্মরত আছেন।
যদিও সামাদের পারিবারিক দাবির বিষয়ে তার পরিবার কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেছে। তবে স্থানীয়রা বলছেন, তিনি সবসময় নিজের বাবা-মায়ের সঙ্গে এখানেই বসবাস করতেন।
সামাদের বড় চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলী বলেন, ‘সামাদ আমার ভাতিজা। কাগজপত্র চুরি করে আমাকে তার বাবা দেখিয়ে এমন জালিয়াতি করেছে। আমি রংপুর পুলিশ অফিসে অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সামাদের বন্ধু আশরাফুল ইসলাম জানান, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে খেলাধুলা করেছি। একই মাদরাসায় পড়েছি। ২০০৯ সালে একসঙ্গে দাখিল পাস করেছি। সে তার বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকত।’
হারাগাছ পাড়া জান্নাতুল ফেরদৌস মাদরাসার এক শিক্ষকও জানান, ‘সামাদের বাড়ি এখানেই। এই মাদরাসা থেকেই সে দাখিল পাস করেছে। তার বাবা-মায়ের সঙ্গে আমার পরিচয় রয়েছে।’
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আব্দুস সামাদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলীকে নিজের বাবা বলে দাবি করেন। তবে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি থানার ওসি শওকত আলী সরকার বলেন, ‘জালিয়াতি করে চাকরি নেওয়া গুরুতর অপরাধ। অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’
