রাজধানী ঢাকায় সম্প্রতি ছিনতাইয়ের একের পর এক ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে ছিনতাইকারীদের হাতে রয়েছে ধারালো চাপাতি, সঙ্গে ব্যবহার করা হচ্ছে মোটরসাইকেল। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলতেই সামনে এলো চাঞ্চল্যকর এক তথ্য—ছিনতাইয়ের জন্য ভাড়ায় মিলছে চাপাতি ও মোটরসাইকেল।
পুলিশ জানায়, একটি সংঘবদ্ধ চক্র রাজধানীতে ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতির জন্য ধারালো অস্ত্র ও যানবাহন সরবরাহ করে থাকে। তারা আগাম কোনো অর্থ না নিয়েই এসব সরঞ্জাম ভাড়া দেয়। ছিনতাইয়ের পর লুট করা মালামাল বিক্রি করে সেই ভাড়া পরিশোধ করতে হয়।
গত ১১ জুলাই রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় এক পথচারীকে চাপাতি দেখিয়ে সব কিছু ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। এসময় তারা ভুক্তভোগীর ব্যাগ, মোবাইল ফোন, এমনকি গেঞ্জি ও জুতা পর্যন্ত কেড়ে নেয়।
পরে এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে, তারা ভাড়ায় চাপাতি ও মোটরসাইকেল নিয়েই ছিনতাই করতে নেমেছিল।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) জানিয়েছে, এই চক্রের মূলহোতা একজন 'কবির' নামের ব্যক্তি, যার কাছ থেকে ছিনতাইকারীরা প্রয়োজনীয় অস্ত্র ও যানবাহন সংগ্রহ করে।
ভাড়ার টাকা ছিনতাই করা পণ্য বিক্রির মাধ্যমেই মেটানো হয়। অনেক ক্ষেত্রে এই চক্রই আবার সেই মালামাল কিনেও নেয়, যাতে দ্রুত লেনদেন শেষ হয়।
এছাড়া, ছিনতাইকারীরা পুলিশের হাতে ধরা পড়লে, জামিনে ছাড়িয়ে আনতেও এই চক্রই টাকা খরচ করে। জামিনে বেরিয়ে আবারও অপরাধে জড়িয়ে পড়ে ছিনতাইকারীরা।
ডিএমপি গোয়েন্দা বিভাগের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ রাকিব খান বেসরকারি টিভি চ্যানেল ইন্ডিপেনডেন্টকে বলেন, তারা চাপাতি ও মোটরসাইকেল ভাড়া দেয়। এর বিনিময়ে ছিনতাই করা মালামাল তাদের কাছে বিক্রি করে ছিনতাইকারীরা।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম বলেন, এসব অপরাধে কারা জড়িত তা আশপাশের লোকজনের মাধ্যমে শনাক্ত করা হচ্ছে। আগে যারা এ ধরনের অপরাধে যুক্ত ছিল, তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের চক্র রাজধানীর নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি। শুধু অপরাধীদের নয়, যারা অস্ত্র ও যানবাহন ভাড়া দিচ্ছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।
আপনার মতামত লিখুন :