ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে যখন দেশের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ ও সমীকরণ সৃষ্টি হচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ।
দলটির ইতিহাসে এই প্রথম ঐতিহাসিক এই স্থানে এমন জনসমাবেশের আয়োজন করা হলো। আর এই সমাবেশ থেকেই ভোট ও রাজনৈতিক জোট নিয়ে আসতে পারে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।
শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুর ২টায় শুরু হওয়া এই মহাসমাবেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো নেতাকর্মী ঢাকায় জড়ো হয়েছেন। অনেকেই আগের দিন থেকেই রাজধানীতে অবস্থান নিয়েছেন।
দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সমাবেশ শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং নির্বাচন পূর্ববর্তী ‘গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অবস্থান’ ঘোষণার মাধ্যমও হতে পারে।
সমাবেশে ৭ দফা দাবি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ওপর জোর
সমাবেশে ৭ দফা দাবি উত্থাপন করবে জামায়াত। এর মধ্যে রয়েছে-
১. সব গণহত্যার বিচার,
২. মৌলিক রাজনৈতিক সংস্কার,
৩. জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন,
৪. জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন,
৫. সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন (PR পদ্ধতি),
৬. প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ,
৭. সবার জন্য সমান সুযোগ বা ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ প্রতিষ্ঠা।
দলটির নেতারা বলছেন, এই সমাবেশের মাধ্যমে ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ার আন্দোলনে একটি বড় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ভোট-জোটে নতুন মোড় নিতে পারে রাজনীতি
জামায়াত সূত্রে জানা গেছে, সমাবেশ থেকে দলীয় আমির ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্যে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা থাকবে, যা ভোট ও সম্ভাব্য রাজনৈতিক জোটের ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্দেশ করতে পারে। বিশেষ করে বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি এই সমাবেশকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে।
সমাবেশের বার্তায় জোট গঠনের বিষয়ে নতুন উদ্যোগ বা কৌশল সামনে আসতে পারে, যা দেশের বিরোধী রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।
জামায়াত নেতারা বলছেন, এই মহাসমাবেশের বার্তা শুধু দেশের মানুষের কাছেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও পৌঁছবে। তারা এটিকে একটি “রাজনৈতিক টার্নিং পয়েন্ট” হিসেবে দেখছেন।
২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক, বড়সড় প্রস্তুতি
সমাবেশ সফল করতে জামায়াত ২০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিয়েছে। ১৫টি পার্কিং স্পট, ১৫টি মেডিকেল বুথ, ড্রোন ক্যামেরা, এলইডি স্ক্রিন, সামাজিক মাধ্যমে লাইভ প্রচারসহ সবদিকেই নেওয়া হয়েছে কঠোর প্রস্তুতি।
জনতার ঢল, যানজটের আশঙ্কা
ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল থেকে ট্রেন, বাস, লঞ্চ ভাড়া করে দলে দলে কর্মী-সমর্থকরা রাজধানীতে প্রবেশ করছেন। এতে করে রাজধানীতে যানজট ও জনভোগান্তি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দলটির পক্ষ থেকে নগরবাসীর প্রতি দুঃখপ্রকাশও করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :