জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারের পর এবার খোদ এনসিপিকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন দলটির সদস্য নীলা ইসরাফিল।
শনিবার (১৯ জুলাই) ভোর সোয়া ৪টার দিকে দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে নীলা লিখেছেন `‘আমি কি এনসিপিকে খেয়ে ফেলব? আমি কি এনসিপিকে ভেঙে ফেলব? আমি কি এনসিপিকে ‘লেংটা’ করার জন্য নিযুক্ত—নাকি এই কথাগুলো বলা হচ্ছে, কারণ আমি প্রশ্ন করতে শিখেছি? আমার প্রশ্ন খুব সোজা।’’
তিনি লেখেন, ‘এনসিপি কি এতটাই দুর্বল, এতটাই নীতিহীন, এতটাই অপারগ যে একজন নীলা ইসরাফিলের বক্তব্যেই নাকি সব ধসে পড়ে? তা যদি হয়, তাহলে আমি বলব, দলটা ভাঙে না, ভেঙে পড়ে। নিজেই নিজের ভার বহনে অক্ষম।’
নীলা ইসরাফিল লিখেছেন, ‘আমি সেই মানুষ, যে দলটির জন্মলগ্ন থেকে মানুষের জন্য কথা বলেছি, যে দিনের পর দিন রাস্তায়, পথে, মঞ্চে দাঁড়িয়ে এনসিপির নামকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছি; যে নারী হিসেবে একা থেকে একা দাঁড়িয়ে থেকেছি, পাশে কেউ না থাকলেও অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি।’
তুষারের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘যে ভয় পায়নি, যখন সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, যে কনসেপ্ট দিয়েছে, কন্টেন্ট বানিয়েছে, প্রচার করেছে, দলের দিকভ্রান্ত পথগুলো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। কারণ আমি দলকে ভাঙতে নয়, গঠন করতে চেয়েছি। কিন্তু আজ যখন একজন তুষার, যার বিরুদ্ধে নির্যাতন, মিথ্যাচার, দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণসহ উত্থাপন হয়েছে, সে দিব্যি দলের ভেতর রাজনীতি করে যাচ্ছে।’
পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘‘আর আমি একজন ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো মানুষ, তাকেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পদযাত্রা থেকে, তখন প্রশ্নটা উঠবেই। এনসিপি কি নীতির দল, নাকি সুবিধাবাদী নাটক? আপনারা যারা আজ ‘নীলা এনসিপিকে খেয়ে ফেলবে’ বলে চিৎকার করছেন, তারা নিজেরাই কি জানেন না আমি কতটা শ্রম, কতটা রক্ত-ঘাম এই দলে ঢেলেছি?’’
সবশেষে তিনি বলেন, ‘কোনোদিন একটিবারও কি নিজের স্বার্থের জন্য দলকে ব্যবহার করেছি? আমি কাউকে খাই না। আমি কাউকে ভাঙি না। আমি শুধু সত্যটা বলি। আর সত্য বললেই যদি একটা দল কেঁপে ওঠে, তাহলে সমস্যা সত্যে না, সমস্যা সেই দলের ভেতরে। তাহলে বলুন, ভয়টা আসলে কাকে? আমাকে, না নিজেরা নিজেদের মুখ দেখার?’
প্রসঙ্গত, এর আগে এনসিপি যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন নীলা ইসরাফিল। এরপর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে এনসিপি।
পাশাপাশি বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়ার আগপর্যন্ত সারোয়ার তুষারকে এনসিপির সব সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :