মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ০৮:১৭ পিএম

মানুষকে কাফের বলার পরিণাম ও নবীজির সতর্কবার্তা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ০৮:১৭ পিএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

ইসলাম ধর্মে কাউকে অযথা বা প্রমাণবিহীনভাবে কাফের বলা অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ হিসেবে ধরা হয়। নবীজি (স.) বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন, ‘একজন যেন অন্যজনকে কাফের বলে অপবাদ না দেয়, কারণ যদি অপর ব্যক্তি কাফের না হয়, তবে অপবাদ তার নিজের ওপর ফিরে আসে।’ (সহিহ বুখারি: ৬৪০৪)

এই হাদিস অনুযায়ী, মুসলিমদের মধ্যে কুফরি প্রকাশ পেলে তাকে সরাসরি কাফের বলা বা তাকফির করা সাধারণ মানুষের কাজ নয়। ফতোয়ায়ে লাজনাতুদ দায়েমা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, ‘কাউকে কাফের বলার ক্ষেত্রে প্রমাণ থাকা, সতর্কতা অবলম্বন করা এবং দলিল স্পষ্ট না হলে দ্রুত তাকফির না করা’ অত্যন্ত জরুরি। (ফতোয়া নম্বর: ৪৪৪৬)

শরিয়তের দৃষ্টিতে অমুসলিমরা স্পষ্টতই কাফের হলেও মুসলিমদের ক্ষেত্রে এটি আলাদা। কুফরের বিষয়ে সন্দেহ থাকলে বা কোনো ব্যাখ্যা পেশ করা হলে কাউকে কাফের বলা যাবে না। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেছেন, ‘প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর নির্দিষ্টভাবে কুফরির হুকুম আরোপ করা যায় না। বরং বলা হবে, যে ব্যক্তি কোনো কাজ করেছে, সেটি কুফরি।’

কাউকে কাফের বলার ক্ষেত্রে বাধা: মাওয়ানেউত তাকফির

ইসলামে সাতটি প্রধান কারণে কাউকে কাফের বলা যায় না:

  • অজ্ঞতা: যারা দ্বীনের মৌলিক বিষয়গুলোর জ্ঞান রাখে না, তাদের কুফরি ওজর হিসেবে গণ্য। তবে ধর্মের অত্যাবশ্যকীয় বিষয় যেমন নামাজ, হজ, উপাসনা—এ ক্ষেত্রে অজ্ঞতা গ্রহণযোগ্য নয়।
  • তাবিল বা ব্যাখ্যা পেশ করা: যদি কেউ তার কুফরির বিষয়ে যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা দিচ্ছে বা কুফর সন্দেহজনক হয়।
  • ইকরাহ বা বাধ্যকরণ: জীবননাশের আশঙ্কা থাকলে কারো কুফর প্রকাশ ওজর হিসেবে গণ্য হবে।
  • ভুলবশত উচ্চারণ: কেউ ভুলবশত মুখে কুফরি উচ্চারণ করলে তাকফির করা যাবে না।
  • অক্ষমতা: নির্জন অঞ্চলে বা দ্বীপে থাকার কারণে দ্বীনের মৌলিক জ্ঞান পৌঁছায়নি।
  • নতুন ইসলাম গ্রহণ: নবীন মুসলিমদের ক্ষেত্রে।
  • বড় কুফর প্রতিরোধে ছোট কুফর: পরিস্থিতিগত প্রয়োগ, যেখানে বড় কুফরের বিরুদ্ধে ছোট কুফর করা হয়।

নবীজির সতর্কবার্তা

নবীজি (স.) সতর্ক করেছেন যে, কোনো মুমিনকে কুফরের অপবাদ দেওয়া মানে তাকে হত্যা করার সমান গুরুতর। (সহিহ বুখারি: ৬১০৫) তাই ইসলামে কাউকে অযথা কাফের বলা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এটি শুধু সামাজিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে না, বরং ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক বিপদও ডেকে আনে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

ইসলামী বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কাউকে কাফের বলার আগে:

  • প্রমাণ থাকা আবশ্যক
  • সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি
  • অভিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে
  • ভুল সিদ্ধান্ত কেবল বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে না, বরং ব্যক্তি ও সমাজের জন্য গুরুতর প্রভাব ফেলে।
  • শিক্ষণীয় দিক
  • কথায় কথায় কাউকে কাফের বলা থেকে বিরত থাকুন।
  • কারো কাজের কুফরিত্বকে তার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিশিয়ে না দেখুন; শুধুমাত্র কাজের দিকটিকেই কুফরি হিসেবে উল্লেখ করুন।
  • অভিজ্ঞ আলেম ও ফতোয়া প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ ছাড়া কাউকে কাফের ঘোষণা না করুন।

নবীজির নির্দেশনা অনুসারে, সতর্কতা ও বিবেচনা ছাড়া কাউকে কাফের বলা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। এই সতর্কবার্তা মুসলিম সমাজকে বিভ্রান্তি, দ্বন্দ্ব ও অযথা অপবাদ থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সেই তাওফিক দান করুন, যেন আমরা সতর্ক থাকি এবং অন্যের ওপর অযথা কাফের বলি না। আমিন।

Link copied!