বর্ষাকাল মানেই একদিকে প্রকৃতির সতেজতা, অন্যদিকে পথেঘাটে জলাবদ্ধতা, কাদামাটি আর অনিশ্চিত বৃষ্টির ঝাপটা। হঠাৎ আকাশ কালো হয়ে আসে, অঝোরে নেমে পড়ে বৃষ্টি। এই মৌসুমে ঘর ছেড়ে বাইরে পা রাখাটা যেমন একরকম চ্যালেঞ্জ, তেমনি সঠিক প্রস্তুতি না থাকলে অল্পতেই ভোগান্তির মুখোমুখি হতে হয়। বিশেষ করে কর্মজীবী মানুষ, শিক্ষার্থী বা প্রয়োজনীয় কাজে বের হতে বাধ্য যারা—তাদের জন্য বর্ষার প্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরি।
তাই বর্ষার দিনে বাইরে যাওয়ার আগে কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় মাথায় রাখা দরকার, যা আপনাকে ভেজা ও বিড়ম্বনা থেকে বাঁচাতে সহায়ক হবে।
ছাতা বা রেইনকোট: বর্ষাকালের সবচেয়ে আবশ্যিক সঙ্গী হলো একটি ভালোমানের ছাতা বা ওয়াটারপ্রুফ রেইনকোট। সম্ভব হলে সঙ্গে একটি ছোট ফোল্ডিং ছাতা সবসময় ব্যাগে রাখুন। খুব বেশি বাতাস থাকলে রেইনকোটই বেশি কার্যকর।
ব্যাগ কভার: আপনার মোবাইল, কাগজপত্র, ল্যাপটপ ইত্যাদি ভিজে গেলে বড় ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তাই ব্যাগ ওয়াটারপ্রুফ না হলে অবশ্যই ব্যাগ কভার ব্যবহার করুন।
স্যান্ডেল বা পানি সহনশীল জুতা: বর্ষায় চামড়ার বা কাপড়ের জুতা ব্যবহার করবেন না। অবশ্যই রাবারের বা পানি প্রতিরোধী স্যান্ডেল পরে ঘর থেকে বের হবেন। এতে পা ভিজলেও দ্রুত শুকিয়ে যায় এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশনও কম হয়।
অতিরিক্ত জামাকাপড় বা তোয়ালে: দীর্ঘ সময় বাইরে থাকতে হলে ব্যাগে একটি ছোট তোয়ালে ও অতিরিক্ত জামা রাখা যেতে পারে। প্রয়োজনে নিজেকে দ্রুত শুকনো করে নেওয়া সম্ভব হবে।
পলিথিন বা ছোট প্লাস্টিক ব্যাগ: ভেজা কাপড়, মোজা বা কোনো কাগজপত্র আলাদা রাখতে পলিথিন বা ছোট জিপ-লক ব্যাগ খুবই উপকারী।
ঔষধ ও স্বাস্থ্য সচেতনতা: বৃষ্টিতে ভিজলে ঠান্ডা-জ্বর, সর্দি বা গলাব্যথা হতে পারে। তাই ব্যাগে প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখুন এবং ভিজে গেলে দ্রুত কাপড় পরিবর্তন করে নিন।
সময় একটু হাতে রেখে বের হওয়া: বর্ষাকালে রাস্তা ভেজা, যানজট বা ট্রাফিক জ্যামের কারণে দেরি হতে পারে। তাই গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য হাতে কিছুটা সময় রেখে বের হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
বর্ষাকালের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে চাই একটু প্রস্তুতি, সচেতনতা এবং পরিকল্পনা। একটু বাড়তি যত্ন ও সতর্কতা আপনাকে বর্ষার বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা করতে পারে।
মনে রাখবেন, বর্ষা আমাদের জীবনে যেমন স্নিগ্ধতা আনে, তেমনি হঠাৎ ঝামেলার কারণও হতে পারে। তাই বর্ষার দিনে বাইরে বের হওয়ার আগে সাবধানতা অবলম্বন করুন- আর উপভোগ করুন প্রকৃতির এই মনোমুগ্ধকর ঋতু।