সুনামগঞ্জ জেলার টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জেলা প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। হাওরের ওয়াচ-টাওয়ার ও তার আশপাশের এলাকায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পর্যটকবাহী হাউসবোট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
রোববার (২২ জুন) রাতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন এক জরুরি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ নির্দেশনা জারি করে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, হাওরের প্রাকৃতিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এমন যেকোনো কার্যক্রম থেকে সবাইকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলার অন্যান্য পর্যটন স্পটেও প্রশাসনের নির্দেশনা কঠোরভাবে মানার আহ্বান জানানো হয়েছে। অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা।
এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশবিদ ও স্থানীয় সচেতন মহল।
তারা জানান, বর্ষাকালীন সময়ে হাওরে জলজ প্রাণী ও পাখিদের প্রজনন সময় হওয়ায় হাউসবোট ও অতিরিক্ত নৌযান চলাচল পরিবেশের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি কাশমির রেজা বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর একটি পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা। এই এলাকায় পর্যটন অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। গত ২০ বছরে হাওরের প্রায় ৭০ ভাগ জীববৈচিত্র্য হ্রাস পেয়েছে-যদিও এ নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা হয়নি। আমরা চাই, এ নিয়ে সরকারিভাবে সুনির্দিষ্ট গবেষণা ও পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
উল্লেখ্য, মূলত আকা-বাঁকা পথ, ঝরনা থেকে নেমে আসা স্বচ্ছ পানি, দূর আকাশে মেঘের খেলা, অগণিত পাখির কলতান আর পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা হিজল-করচ বনের অপরূপ সৌন্দর্যের দেখা মেলে টাঙ্গুয়ার হাওরে। বর্ষা ও শীত এই দুই মৌসুমে দুই রকমের সৌন্দর্যে অপরূপ হয়ে ওঠে এই হাওর।
তবে পর্যটকদের মতে, এই হাওর তার আসল সৌন্দর্যে সাজে বর্ষাকালে।
সুনামগঞ্জের পর্যটন স্পটের মধ্যে সবচেয়ে সৌন্দর্যের আধার টাঙ্গুয়ার হাওর। হাওরটি রূপে-গুণে এরই মধ্যে দেশবিদেশের পর্যটকদের নজর কেড়েছে। তাই বর্ষা মৌসুমে সুযোগ পেলেই ইট-পাথরের যান্ত্রিক শহর থেকে বেরিয়ে এসে পর্যটকরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন এই সৌন্দর্য দর্শনীয় স্থানে।