ঢাকা শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫

বিশ্ব ইজতেমার ২য় পর্বের আখেরি মোনাজাত

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪, ০৯:২১ এএম

বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০ টায় অনুষ্ঠিত হবে। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন ভারতের মাওলানা সাদ কান্দলভির বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ। এর আগে হেদায়েতি তথা দিক নির্দেশনামূলক বয়ান করা হবে। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে বিশেষ বাস ও ট্রেনের ব্যবস্থা থাকছে। এছাড়া মোনাজাতে মুসল্লিদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে বিশেষ ট্রাফিক পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ।

ইজতেমার আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, ইজতেমা ময়দানের ৮৯টি খিত্তায় অবস্থান নিয়েছেন দেশ বিদেশের লাখো মুসল্লি। ফজরের নামাজের পর পিনপতন নিরবতায় ধর্মীয় বয়ান শুনছেন তারা। বয়ানের পর এগুলো থেকে নেওয়া শিক্ষা নিয়ে প্রতিটি খিত্তায় দলবেঁধে নিজস্ব আমিরের (দলনেতা) নেতৃত্বে হবে আলোচনা।

সকাল সাড়ে ১০টায় তালিমে হালকা মোয়াল্লেমেরদের নিয়ে কথা বলেন মাওলানা আব্দুল আজিম। ইজতেমায় তাবলিগ জামাতের নানা আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াও মূল বয়ান মঞ্চের পাশে অনুষ্ঠিত হয় গণবিয়ে।

তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরুব্বিরা আরবি, উর্দু ও হিন্দিতে বয়ান করলেও তাৎক্ষণিকভাবে এগুলো বাংলা, ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়। এছাড়া যারা তাবলিগের দাওয়াতী কাজে বের হবেন খিত্তা অনুযায়ী তাদের তাশকিল কামরায় তালিকাভুক্ত করা হয়।

ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক মোহাম্মদ সায়েম বলেন, ইজতেমার দ্বিতীয় দিনে জোহরের নামাজের পরে বয়ান করেন ভারতের মাওলানা শরিফ, বাংলা তরজমায় মাওলানা মাহমুদুল্লাহ, আসরের পরে বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা ওসমান, বাংলা তরজমায় মাওলানা আজিম উদ্দিন। তার বয়ানের পরে অনুষ্ঠিত হয় যৌতুকবিহীন গণবিবাহ। মূল বয়ান মঞ্চের পাশে শরীয়া আইন অনুযায়ী ফাতেমি রীতিতে কনের অভিভাবক বর ও তার আত্মীয় স্বজনের উপস্থিতিতে এ বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি আরও বলেন, রোববার ফজরের পরে বয়ান করবেন ভারতের মুফতি মাকসুদ, বাংলা তরজমায় মাওলানা আব্দুল্লাহ। বয়ানের পরেই হেদায়াতি বয়ান ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। মজলিশে শূরার সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে ১১ টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন ভারতের মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ।

এদিকে, ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ১৫ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ময়দানের ভেতরে ও বাইরে কাজ করছে। সিসিটিভি ও ওয়াচ টাওয়ার দিয়ে পুরো ময়দান ও আশেপাশের এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের লোকজন সমন্বিতভাবে কাজ করছেন।

বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত থেকে গাজীপুরের তিন সড়ক, মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। মোনাজাত শেষে রোববার দুপুর দুটার পর সড়কগুলো আবার খুলে দেওয়া হবে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

রাত থেকেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস, টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কের মিরের বাজার থেকে টঙ্গীর স্টেশন রোড পর্যন্ত এবং ঢাকার কামারপাড়া মোড় থেকে টঙ্গীর মন্নু গেইট সড়ক।

গাজীপুর মহানগর পুলিশ ও ঢাকা মহানগর পুলিশের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসব সড়কে ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীদের বহনকারী যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি চলতে পারবে না। তবে জরুরি প্রয়োজনের গাড়ি অ্যাম্বুলেন্স, গণমাধ্যমকর্মী বা বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।

এ ব্যাপারে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, আখেরি মোনাজাতে বিপুলসংখ্যক মুসল্লির সমাগমের সুবিধার্থে সড়কে বাড়তি পুলিশ থাকবে। এছাড়া ইজতেমার আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে মধ্যরাত থেকে আবদুল্লাহপুর-ভোগড়া বাইপাস, মীরের বাজার-টঙ্গীর স্টেশন রোড ও কামারপাড়া মোড় পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে এবং বিকল্প সড়কে ওই রুট ব্যবহারকারী যানবাহনকে চলাচল করতে দেওয়া হবে।

এই পর্বে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি মুসল্লির আগমন ঘটেছে। ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কুয়েত, ফিলিস্তিন, জর্ডান, নেপাল, মায়ানমারসহ বিশ্বের ৬২টি দেশের ৭ হাজার ৮৪৮ জন বিদেশি মেহমান এসেছেন বলে জানিয়েছেন ইজতেমার আয়োজকরা।