ঢাকা মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫

বললেন ডা. সায়েদুর রহমান    

প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা কঠিন ও ব্যয়সাপেক্ষ

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০১:০০ এএম

প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি জটিল ও ব্যয়সাপেক্ষ হলেও দেশীয় চিকিৎসা খাতে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় (বিএমইউ) পথপ্রদর্শক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। তিনি উল্লেখ করেন, শুধু তথ্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে চিকিৎসকদের প্রজ্ঞা ও নৈতিকতার সমন্বয়ে চিকিৎসাসেবা দিতে হবে।

গতকাল সোমবার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ওয়ার্ল্ড এভিডেন্স-বেইজড হেলথকেয়ার ডে উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসাপদ্ধতি কঠিন এবং ব্যয়সাপেক্ষ। এ বিষয়ে আমরা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় চালাচ্ছি। যদি এই বোঝাপড়া কার্যকরভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, তবে এর ফল দেশের স্বাস্থ্য খাতে অনেক প্রভাবশালী হবে। তিনি আরও বলেন, বিএমইউ দেশের চিকিৎসা খাতে প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতিসহ অন্যান্য নতুন বিষয়গুলোতে পথপ্রদর্শক হবে। চিকিৎসকদের শুধু তথ্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে, তাদের প্রজ্ঞা কাজে লাগিয়ে সঠিক চিকিৎসা দিতে হবে। বিজ্ঞান এবং নৈতিকতার মধ্যে সমন্বয় সৃষ্টি করা অত্যন্ত জরুরি।

সভাপতির বক্তব্যে বিএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা হলে রোগীর আস্থা বৃদ্ধি পাবে, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও চিকিৎসা ব্যয় কমানো সম্ভব হবে। চিকিৎসক ও রোগীর মধ্যে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। বিশেষ অতিথি বিএমআরসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েবা আখতার বলেন, দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা টেকসই করতে হলে প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা অপরিহার্য। এটি সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করে এবং জনগণের অর্থ সাশ্রয়েও সহায়ক।

অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথি ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম ও প্রক্টর ডা. শেখ ফরহাদ। তারা বলেন, প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসার মাধ্যমে রোগী ও চিকিৎসকের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি পাবে, ভুল প্রেসক্রিপশন ও অপ্রয়োজনীয় চিকিৎসা কমানো সম্ভব হবে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি ইন্স্যুরেন্স সেলের অতিরিক্ত পরিচালক ডা. দীন-ই-মুজাহিদ মোহাম্মদ ফারুক ওসমানী। স্বাগত বক্তব্য দেন আইকিউএসি পরিচালক অধ্যাপক ডা. নুরুন নাহার খানম।

দিবসের কর্মসূচির মধ্যে ছিল ই-পোস্টার প্রদর্শন, মাস্টার প্রেজেন্টেশন, ফেলোস প্রেজেন্টেশন এবং ‘প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা : আশা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক বিতর্ক। এতে দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন। শেষপর্যায়ে সনদপত্র ও ক্রেস্ট বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়। এ সময় বক্তারা উল্লেখ করেন, প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা শুধু চিকিৎসা খরচ কমাবে না, একই রোগীর জন্য একাধিক চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের পার্থক্যও হ্রাস করবে। চিকিৎসাশিক্ষা ও গবেষণার প্রতিটি স্তরে এর প্রভাব দেশীয় স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।