মিরপুরের শেরে-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট নতুন করে তৈরি করা হলেও চরিত্র বদলায়নি। এশিয়ার বাইরের দলগুলোর জন্য স্পিন ফাঁদ তৈরি করার যে প্রচেষ্টা অতীতে চালিয়েছে বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও সেই একই পুরোনো কৌশল নিতে দেখা গেল। দুই দলের সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে মিরপুরের উইকেটে স্পিনারদের জন্য ছিল জয়জয়কার। টার্ন পেয়েছেন স্পিনাররা। ব্যাটিং করতে কষ্ট হয়েছে ব্যাটসম্যানরা। প্রত্যাশিত ফল পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০৭ রান স্কোর বোর্ডে তুলেও ৭৪ রানের বড় জয় তুলে নেয় তারা। মিরপুরের উইকেটে এবার স্পিন ছক কষেই এক ম্যাচ হাতে রেখে ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ। এরই মধ্যে সিরিজে চোখ রেখে আরেকজন বাড়তি স্পিনার দলে নেওয়া হয়েছে। সেই স্পিনার হলেন নাসুম আহমেদ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও যে স্পিনারদের শক্তিতেই ম্যাচ জিতে নিতে চায় স্বাগতিকরা, সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
২০২৭ সালের বিশ^কাপে সরাসরি খেলতে হলে আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ আটে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। এ সময়ের মধ্যে ২৪টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। এরই মধ্যে একটি ম্যাচ খেলে ফেলেছে তারা। র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে হোম অ্যাডভান্টেজ কাজে লাগাচ্ছে বাংলাদেশ। স্পিন উইকেট তৈরি করে ক্যারিবীয়দের অস্বস্তিতে ফেলেছে তারা। অবশ্য প্রতিটি দলই হোম অ্যাডভান্টেজ নিয়ে থাকে। সে হিসেবে বাংলাদেশ অনুমিত সুবিধাই নিচ্ছে। তবে এমন উইকেটে খেলা কতটা ক্রিকেটের উন্নতিতে সহায়ক হবে, সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মিরপুরের কালো মাটির রহস্যময় উইকেটে খেলার পর দেশের বাইরে গিয়ে আর সুবিধা করতে পারে না বাংলাদেশ। তারা ফিরে যায় সেই পুরোনো চেহারায়। বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে পুরো দল। ব্যাটিং লাইনআপ ধস নামার দৃশ্যটা তখন প্রতিদিনের ছবি হয়ে দাঁড়ায়। ব্যাটিং ব্যর্থতায় দল হারের বৃত্তে হাবুডুবু খায়। তখন ব্যাপারটি দাঁড়ায়Ñ ঘরের মাঠে ‘বাঘ’ আর পরের মাঠে ‘বিড়াল’!
মিরপুরের উইকেট নিয়ে যত কথাই হোক না কেন, জয়ের ছন্দ ধরে রাখতে চায় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হারিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিতে চায় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। গত ম্যাচে বাংলাদেশ ওয়ানডে দলে অভিষেক হয়েছে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের। প্রথম ম্যাচেই ৪৬ রানের ইনিংস খেলে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় ম্যাচেও তার প্রতি ভরসা রাখবে টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে উদ্বোধনী জুটি ঘিরে দুশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। কেননা অনেক রদবদল আনলেও উদ্বোধনী জুটি কিছুতেই জমছে না। সিরিজের প্রথম ম্যাচে সৌম্য সরকার আর সাইফ হাসানের ব্যাটে রান আসেনি। দ্বিতীয় ম্যাচে স্বরূপেই ফিরতে চাইবেন তারা। ব্যাটসম্যানদের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও। প্রথম ম্যাচ জয়ের পর তিনি বলেছেন, স্কোর বোর্ডে ভালো রান থাকলে জয় সহজ হয়ে যায়। ব্যাটসম্যানরা আরো বেশি ইতিবাচক খেলার চেষ্টা করবে। রান এলে ম্যাচ জিততে পারবে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ বলেছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হারানো সম্ভব। এ জন্য আত্মবিশ^াসী বাংলাদেশ।