লোকজ গানের ধারায় নিজস্ব ভঙ্গি ও কণ্ঠের জাদুতে কিশোর পলাশ এক পরিচিত নাম। গ্রামীণ সুরকে আধুনিক আঙ্গিকে তুলে ধরে তিনি লোকসংগীতকে পৌঁছে দিয়েছেন নতুন প্রজন্মের কাছে। তার কণ্ঠে ভিন্ন আবহ, সহজ-সরল কথায় জীবনের গল্প, যা শ্রোতাদের হৃদয়ে দাগ কাটে। ফলে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে ভারতের বাংলাভাষী মানুষদের কাছেও সমানভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন কিশোর পলাশ।
প্রথম অ্যালবাম ‘একজোড়া’ প্রকাশের পরই শ্রোতাদের নজর কাড়েন কিশোর পলাশ। বিশেষ করে অ্যালবামের ‘ভাঙা তরী ছেঁড়া পাল’ গানটি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে, ক্রমে প্রকাশ করেন ‘জয় গুরু’, ‘ভবের বাড়ি’, ‘দয়াল’ ও ‘সন্ন্যাসী’ সহ একের পর এক আলোচিত অ্যালবাম।
সিডির যুগ পেরিয়ে অনলাইন মাধ্যমে উত্থান কিশোর পলাশকে পৌঁছে দিয়েছে এক ভিন্ন উচ্চতায়। ইউটিউব ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তার গানের বিপুল ভিউই প্রমাণ করছে লোকসংগীত এখনো সমানভাবে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য। মাত্র দশটি গানের ভিউ মিলিয়ে ছাড়িয়েছে ৩৫ কোটি। এর মধ্যে ‘ভাঙা তরী ছেঁড়া পাল’ দেখেছেন ৮ কোটিরও বেশি শ্রোতা। ‘কলঙ্কি’র ভিউ ছুঁয়েছে ৯ কোটি, ‘ভবের বাড়ি’র দর্শক ৬ কোটির বেশি। এ ছাড়া ‘আমরা সবাই পেসেঞ্জার’, ‘দয়াল’, ‘কূল ভেঙেছে’, ‘দিল দিয়া যারে ভালোবাসিলাম’, ‘যৌবন গেলে আর প্রেম হবে না’, ‘ঘরের বাত্তি’ ও ‘না চিনিতে মানুষ’, প্রতিটি গানই কোটি ভিউয়ের মাইলফলক অতিক্রম করেছে।
কিশোর পলাশ মনে করেন, শ্রোতাদের ভালোবাসাই তার গানের সবচেয়ে বড় প্রেরণা। তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাষাভাষী মানুষ যেখানে আছেন, দেশে বা দেশের বাইরে, সেখানেই তার শ্রোতা রয়েছে।’ এই ভালোবাসার প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ। ভক্তদের চাহিদা পূরণে শিগগিরই নতুন কিছু গান প্রকাশের পরিকল্পনার কথাও জানান এই শিল্পী।
এই সাফল্য প্রমাণ করে, লোকসংগীতের মাটি যত গভীরেই প্রোথিত থাকুক না কেন, সঠিক পরিবেশনায় সেটি সীমান্ত ও প্রজন্ম পেরিয়ে হৃদয়ে পৌঁছাতে পারে। আর সেই কাজটি নিপুণভাবে করে যাচ্ছেন কিশোর পলাশ।